গ্যাসের দাম ৭৫ শতাংশ বাড়ানো দরকার, বেড়েছে ৩২.৮ শতাংশ: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় সংসদে বক্তব্য দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
জাতীয় সংসদে বক্তব্য দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতি ঘনমিটার গ্যাসে আমাদের খরচ হয় ৬১ টাকা ১২ পয়সা। আর তা দেয়া হচ্ছে মাত্র ৯ টাকা ৮০ পয়সায়।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন মূল্যায়ন করে দেখেছে- বর্ধিত ব্যয় নির্বাহের জন্য কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ দাম বৃদ্ধি করা প্রয়োজন ছিল। সেখানে গ্রাহকদের আর্থিক চাপের বিষয়টা বিবেচনা করে মাত্র ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়েছ্।
বৃহস্পতিবার একাদশ সংসদের প্রথম বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সাল পর্যন্ত আমি তখন প্রধানমন্ত্রী, আমার ওপর প্রবল চাপ আসলো যে গ্যাস রফতানি করতে হবে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ঢাকায় এসে আমার কাছে প্রস্তাব দিলেন। এরপর দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গেলেন-সেখানেও প্রস্তাব করলেন যে, গ্যাস বিক্রি করতে হবে ভারতের কাছে। আমেরিকার কয়েকটা কোম্পানি আমাদের এখানে গ্যাস উত্তোলন করতো, এখনো করে। আমি বলেছিলাম- আমাদের কত গ্যাস আছে সেটা আগে জানতে হবে। এটা আমার দেশের সম্পদ। দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য অন্তত ৫০ বছরের রিজার্ভ রেখে এর অতিরিক্ত গ্যাস যদি থাকে বিক্রি করতে রাজি আছি, এর আগে না। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলো, তখন জিমি কার্টার এই ব্যাপারে কথা বলতে আসেন। যমুনায় ছিলেন। আমাদের দল থেকে আমি ও সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান এবং বিএনপির খালেদা জিয়াসহ তাদের সাধারণ সম্পাদককে ডাকা হলো।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি রাজনীতি করি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। দেশের সম্পদ বিক্রি করে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে, এই রাজনীতি করি না। সে কথা আমি জিমি কার্টারকে স্পষ্টভাবে বলে এসেছিলাম। এরপর চলে আসি। খালেদা জিয়া থেকে যান, সেখানে মুচলেকাও দিয়ে আসেন। যার ফলে ২০০১ সালে ভোট পেয়েও আমরা সরকার গঠন করতে পারিনি। এটাই হলো বাস্তবতা। সেটা নিয়ে আমার আপসোস নেই। আমাদের তো গ্যাস নেই, থাকলে দেব। বলা হলো দেশ গ্যাসে ভাসে, আমি তো দেখি না সেটা। উন্নয়নের জন্য করছি, উন্নয়ন জ্বালানি ছাড়া হয় না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্যাসের চাহিদা মেটানোর জন্য আমরা এলএনজি আমদানি করছি। দেশে শিল্পায়ন হচ্ছে, শিল্পায়নের সাথে-সাথে চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু সেই পরিমাণ গ্যাস আমাদের নেই। আমরা কুপ খনন করছি। গ্যাসের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। যেটুকু পাওয়া যাচ্ছে, সেটুকু উত্তোলন করা হচ্ছে। বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। সেখানেও গ্যাস উত্তোলনের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। তিনি বলেন, গ্যাসের দাম নিয়ে যে কথাগুলো আসছে- দাম না বাড়িয়েও উন্নয়ন করা যাবে। দাম বাড়ানোর প্রয়োজনটা কেন ছিল? গ্যাসের বর্ধিত ব্যয় নির্বাহের জন্য পেট্রোবাংলা বিভিন্ন কোম্পানিসহ ১০২ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছিল। এলএনজি আমদানি খুব ব্যয় সাপেক্ষ।