রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ চুক্তি সই

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি সরবরাহে রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান টিভিইএলের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও এ চুক্তি সই হয়। চুক্তির আওতায় রূপুপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়াম সরবরাহ করবে রাশিয়ার এই প্রতিষ্ঠান।

গত ৩১ শে জানুয়ারি রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান টিভিইএলের সঙ্গে জ্বালানি সরবরাহের প্রাথমিক চুক্তি সই হয়। এর ধারাবাহিকতায় চূড়ান্ত চুক্তি হলো। এ চুক্তি অনুযায়ী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যতদিন উৎপাদনে থাকবে, ততদিন রাশিয়া ইউরেনিয়াম সরবরাহ করবে।

বাংলাদেশের পক্ষে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ও রাশিয়ান ফেডারেশনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান টিভিইএল ফুয়েল কোম্পানি কমার্শিয়াল ডিরেক্টর ফেদর শকোলভ চুক্তিতে সই করেন।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। তিনি বলেন, ফুকুশিমার মতো দুর্ঘটনা ঘটলেও আমাদের কোনো ভয় নেই। এরই মধ্যে কোর ক্যাচার নামে নতুন প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে। ফুকুশিমায় গ্যাস বের হতো, এখানে গ্যাস বের হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

বিশ্বব্যাপী প্রচলিত নিয়ম অনুসরণ করে চুক্তি হয়েছে উল্লেখ করে ইয়াফেস ওসমান বলেন, কিছু ফর্মুলা রয়েছে যার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সারা পৃথিবী যেভাবে চুক্তি করে, আমরাও সেভাবে করছি। আমাদের ক্ষতি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মানুষের সামান্য ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। সবকিছু করা হচ্ছে মানুষের স্বার্থে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহে এটি একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি। জ্বালানির মূল্য নির্ধারণে ইউরেনিয়ামের দাম, কনভারশন সার্ভিস, এনরিচমেন্ট সার্ভিস ও ফুয়েল ফেব্রিকেশন বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। ১০ বছর অন্তর এ মূল্য পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ থাকছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ১ গ্রাম ইউরেনিয়ামে প্রায় ২৪ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে প্রায় তিন টন কয়লা প্রয়োজন।

রাশিয়া পাবনার রূপপুরে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। এ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালে এবং দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৪ সালে উৎপাদনে আসবে। দুটি ইউনিট মিলিয়ে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

চুক্তি স্ই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ান ফেডারেশনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার আই ইগনাতভ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক শৌকত আকবর।