গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সাগরে দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ

গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে নতুন করে আন্তর্জাতিক দরপ্রস্তাব আহ্বান করতে যাচ্ছে পেট্রোবাংলা। চলতি বছরের শেষের দিকে এই দরপত্র আহ্বান করা হতে পারে।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির পর গভীর সাগরে বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে খুব শিগগির তেলগ্যাস অনুসন্ধান প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। সীমানা বিরোধ বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের দেয়া রায়ে তেল অনুসন্ধানের জন্য বাংলাদেশের করা ব্লকগুলো প্রায় অপরিবর্তিত আছে। ফলে নতুন করে খুব বেশি পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে না। নতুন সীমানা নির্ধারনের সব প্রক্রিয়া শেষ হলেই এই কাজ শুরু হবে।
২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর গভীর ও অগভীর সাগরের মোট ১২টি ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। এরমধ্যে অগভীর সাগরের ৯টি ব্লকের জন্য দর প্রস্তাব জমা পড়লেও গভীর সাগরের তিনটি ব্লকের জন্য কোনো আন্তর্জাতিক কোম্পানি আগ্রহ দেখায়নি। প্রাথমিকভাবে সাত নম্বর ব্লকে অনুসন্ধানের জন্য কনোকো ফিলিপস এবং চার ও নয় নম্বর ব্লকের জন্য ভারতীয় কোম্পানি ওএনজিসিকে নির্বাচিত করা হয়।
গতবছরের ২৮ মে আবার অগভীর সাগরের ছয়টি ব্লকের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। এবার মাত্র একটি ব্লক ১১ নম্বরের জন্য স্যান্তোস ও ক্রিস এনার্জি যৌথভাবে দর প্রস্তাব জমা দেয়। এর মধ্যে ওএনজিসি এবং সান্তোস ও ক্রিসের সঙ্গে পিএসসি সাক্ষর করেছে পেট্রোবাংলা। কিন্তু কনোকো গ্যাসের দাম না বাড়ালে পিএসসি করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।
পিএসসি ২০০৮ অনুযায়ি প্রতি হাজার ঘনফুট (এক ইউনিট) গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয় চার দশমিক দুই ডলার। পরবর্তীতে গভীর সাগরে ইউনিট প্রতি সাড়ে ছয় ডলার দাম নির্ধারণ করে পিএসসি ২০১২ নির্ধারণ করা হয়।
বর্তমানে মিয়ানমারে বিদেশী কোম্পানিকে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম সাত ডলারের বেশি দেয়। অন্যদিকে বাংলাদেশ কনোকো-ফিলিপসের সঙ্গে যে পিএসসি করেছে তাতে গ্যাসের দাম ধরা হয়েছে সাড়ে চার ডলার। কনোকো মিয়ানমারের সমান অথবা কাছাকাছি গ্যাসের দাম করার প্রস্তাব দিয়েছে।
এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর বলেন, আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে দরপত্র আহবান করার। যথাসময়ে এই কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আনতে নতুন দরপ্রস্তাবকে আকর্ষনীয় করা হবে। আকর্ষণী দরপ্রস্তাব না হলে এখানে প্রয়োজনমত সাড়া পাওয়া কষ্ট সাধ্য হবে। বর্তমানে মিয়ানমার এই কৌশল নেয়ায় বহু বিদেশি কোম্পানি সেখানে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।