মেঘনাঘাট-২ এর গ্যাস টারবাইন স্থাপন শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সামিট বদ্ধপরিকর। সেই লক্ষ্যে
রাজধানী ঢাকার পাশে নির্মাণাধীন সামিট মেঘনাঘাট-২ বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাস টারবাইন স্থাপন শুরু হয়েছে। এটি জিই’র সর্বাধুনিক ৯ এইচএ.০১ হেভি-ডিউটি গ্যাস টারবাইন।
৫৮৩ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার এই কেন্দ্র ২০২২ সালে চালু হবে। এতে প্রায় সাত লাখ আবাসিক গ্রাহকের বিদ্যুতের প্রয়োজন মিটবে।
এই গ্যাস টারবাইনটি স্বল্প জ্বালানিতে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। সর্বনিম্ন (নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং কার্বণডাই অক্সাইড) বায়ুনিঃসরণ করে। মূলধন ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কম। এইচএ টেকনোলজি টেকসই বিদ্যুৎ উৎপাদনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বর্তমানে জিই’র এইচ-ক্লাস এইসেগমেন্টে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত গ্যাস টারবাইন। ফ্রান্সের বেলফোর্টে নির্মিত এইজিই ৯এইচএ.০১ গ্যাস টারবাইনটি ৫০-হার্জ সেগমেন্টের কম্বাইন্ড সাইকেলে বিশ্বরেকর্ডধারী নিট ৬৩ দশমিক ৭০ শতাংশ কার্যকরী। এছাড়া টারবাইনটির পূর্ণজীবনকালে মোট খরচ সাশ্রয়ী।
- ২০২২ সালে চালু হবে
- বাংলাদেশে বেসরকারি বিদ্যুৎখাতে একক বিনিয়োগ হিসেবে সর্বোচ্চ
সামিট গ্রুপ অফ কোম্পানিজ-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান বলেন, সামিট বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বেগবানে দেশের মানুষের জন্য প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ করে যাচ্ছে। এখনো মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহারে বাংলাদেশ ভারতীয়-উপমহাদেশের মধ্যে পিছিয়ে, যদিও বাংলাদেশের মাথা পিছু জিডিপি বৃদ্ধির হার এই অঞ্চলে সবচাইতে বেশি। আমরা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জিই’র সর্বাধুনিক এইচএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাশ্রয়ী এবং নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে আশাবাদী। তিনি বলেন, সামিট মেঘনাঘাট-২ প্রকল্পটি বাংলাদেশের বেসরকারি বিদ্যুৎ খাতের এযাবৎকালের সর্ববৃহৎ একক বিনিয়োগ।
জিই’র দক্ষিণ এশিয়ার গ্যাস পাওয়ারের সিইও দীপেশ নন্দা বলেন, সামিটগ্রুপের সাথে দীর্ঘমেয়াদী সহযোগি হিসেবে থাকতে পেরে জিই গর্বিত। আগামীতেও জ্বালানিখাতে বিভিন্ন সেবা ও সমাধান প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতি হওয়ার যাত্রায় সকল উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা উত্তরণে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশে জিই’রএকাধিক গ্যাস টারবাইন স্থাপনা রয়েছে যা সম্মিলিতভাবে প্রায় তিন গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম।
টার্নকি ইপিসি চুক্তির আওতায় জিই সামিট মেঘনাঘাট-২ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জন্য একটি ৯এইচএ.০১ গ্যাস টারবাইন, একটি থ্রি প্রেশার লেভেল আরএইচ-রিহিটার ড্রামটাইপ হিট রিকভারি স্টিম জেনারেটর (এইচআরএসজি), একটি স্টিম টারবাইন, একটি গ্যাস টারবাইন জেনারেটর, একটি স্টিম টারবাইন জেনারেটর, একটি কনডেন্সার এবং আনুষাঙ্গিক সরঞ্জামসহ ব্যালেন্স অফপ্ল্যান্ট (বিওপি) সলিউশনস দিচ্ছে। জিই আগামী ২২ বছর পর্যন্ত গ্যাস টারবাইন এবং জেনারেটরের রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের কাজ করবে।
সামিট মেঘনাঘাট-২ প্রকল্পের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় এগারশ’র ও বেশি শ্রমিক কাজ কওে যাচ্ছেন। বর্তমানে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির বিবেচনায় সামিট এবং জিই’র সদস্যরা সকলের নিরাপত্তা এবং জাতীয়, স্থানীয় ও কোম্পানির স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে গ্যাস টারবাইনটির স্থাপনের কাজ করে যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের বৃহত্তম বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, যা জাতীয় গ্রিডে প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম অবকাঠামো উন্নয়নকারী ব্যবসায়িক গোষ্ঠী সামিটগ্রুপের একটি অংশ। ইতোপূর্বে, সামিট ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে এলএনজি টার্মিনাল, বৃহৎ কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণে। এছাড়া সামিট সার্ক অঞ্চলে প্রাথমিক জ্বালানি অবকাঠামো উন্নয়নে আগ্রহী।
২০১৯ সালের ১৪ই মার্চ, সামিট এবং জিই’র যৌথবিনিয়োগ, সামিট মেঘনাঘাট-২ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সাথে বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তি (পিপিএ) করে। ইতোমধ্যে প্রকল্পটি ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের দ্বৈত-কিস্তিভিত্তিক ঋণ অর্জনের জন্য অ্যাসেটত্রিপল এ ইনফ্রাস্ট্রাকচারের পক্ষ থেকে ‘পাওয়ার ডিল অফ দ্য ইয়ার ২০২০’ পুরস্কার লাভ করে। সামিট মেঘনাঘাট-২ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড সামিটগ্রুপেরএকটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান।
ছবিক্যাপশন: সামিট এবং জিই যৌথভাবে বাংলাদেশে প্রথম জিই’র৯এইচএ গ্যাস টারবাইনটি সামিট মেঘনাঘাট-২ গ্যাস প্লান্টের ফাউন্ডেশনে স্থাপনাশুরু করেছে। ছবি: সংগৃহীত