বাংলাদেশে জ্বালানি তেল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার আশ্বাস সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাশিয়া ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা বাড়লেও বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার আশ্বাস দিয়েছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ।
বুধবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের ‘উচ্চ পর্যায়ের’ সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং সৌদি প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ নিজ নিজ পক্ষের নেতৃত্ব দেন।
সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি যেটা আপনাদের বলতে পারি, তেলের বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তেলের সরবরাহ নিয়ে শঙ্কার কিছু এখনও নেই।
সৌদি আরব জ্বালানি তেল উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে। প্রতিদিন এক কোটি ১০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করে, যা বিশ্বের মোট উৎপাদনের প্রায় ১১ শতাংশ।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন সৌদি আরবের আরামকো থেকে বছরে ৭ লাখ টন আরব লাইট অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে।
রাশিয়া তেল উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে। তারা প্রতিদিন প্রায় ৫০লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করে, যার অর্ধেকের বেশি যায় ইউরোপে।
বৈঠকের পর শুল্ক খাতে সহযোগিতা বাড়াতে চুক্তি এবং বাংলাদেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমি ও বাদশা ফয়সাল ইনস্টিটিউটের মধ্যে সহযোগিতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ ও সৌদি আরব।
বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি সৌদি আরবের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য পথনকশা প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো, দক্ষ জনবল নিয়োগ, হজ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, আইসিটি ও পর্যটন নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কিছু সৌদি কোম্পানি ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে। কিছু কোম্পানি আরও বেশি সম্পৃক্ততার কথা ভাবছে। এতে বাংলাদেশ নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা করবে আশা করি।
ড. মোমেন সৌদি আরবে এক হাজার কোটি গাছ এবং মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে পাঁচ হাজার কোটি গাছ লাগানোর জন্য সৌদি গ্রিন ইনিশিয়েটিভের সাথে সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্বসহ ছয়টি নতুন ক্ষেত্র উপস্থাপন করেন। অন্যগুলো হল, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীতে সৌদি বিনিয়োগ; পর্যটন ও হোটেল শিল্পের উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ, চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদ এবং সৌদি উদ্যোগে বাংলাদেশে দক্ষতা প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উন্নয়ন।
উভয় নেতা স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা, রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের প্রাধান্য এবং জাতিসংঘের সনদ সমুন্নত রাখার বিষয়ে সকল প্রধান বৈশ্বিক ইস্যুতে অবস্থানের ঘনিষ্ঠতায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে এই সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে সম্মত হন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সৌদির সহযোগিতা কামনা করেন। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবিষয়ে সংকট সমাধানে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।