অস্বাভাবিক বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম
নিজস্ব প্রতিবেদক :
অবশেষে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল। আন্তর্জাতিক বাজারে যখন একটু একটু করে দাম কমছে তখন দেশে বাড়ল তেলের দাম।
ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিন প্রতি লিটার ৮০ টাকা থেকে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে। অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্টোল ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রাত ১২ টা থেকে এই দাম কার্যকর হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে এতথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
একসাথে এত পরিমান দাম আগে কখনো বাড়েনি। এর আগে প্রতি লিটার ৬৫ টাকা থেকে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছিল। এবার একবারে লিটারে ৩৫ টাকা বাড়ানো হলো।
দাম বাড়ানোর ঘোষণার পরে রাজধানীসহ বিভিন্ন পাম্পে আর তেল না দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সাথে সাথে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আরও এক ধাপ বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, যতদিন সম্ভব ছিল ততদিন জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কথা চিন্তা করা হয়নি। অবস্থার প্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই কিছুটা সমন্বয় করতে হয়েছে।
বৈশ্বিক বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ার কারণে বাংলাদেশ প্রেট্টোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি), ইস্টার্ণ রিফাইনারী লিমিটেড(ই আর এল)-এ পরিশোধিত এবং আমদানি/ক্রয়কৃত ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্টোল এর মূল্য সমন্বয় করে ভোক্তা পর্যায় নিম্নোক্তভাবে পুণঃনির্ধারণ করা হলো।
জ্বালানি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনঃবিবেচনা করা হবে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের উর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশ সহ বিভিন্ন দেশে নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। ভারত ২২মে থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২.৭৬ রুপি এবং পেট্রোল লিটার প্রতি ১০৬.০৩ রুপি নির্ধারণ করেছে যা অদ্যাবধি বিদ্যমান রয়েছে। এই মূল্য বাংলাদেশী টাকায় যথাক্রমে ১১৪.০৯ টাকা এবং ১৩০.৪২ টাকা। ( ১ রুপি = গড় ১.২৩ টাকা)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটার প্রতি ৩৪.০৯ এবং পেট্টোল লিটার প্রতি ৪৪.৪২ টাকা কমে বিক্রয় হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বিপিসি জানিয়েছে, বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম কর্পোরেশন বিগত ছয় মাসে ( ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রয়ে (সকল পণ্য ) ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। বর্তমানে, আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখাতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।