চাঁদের মাটি ছুঁয়ে ইতিহস গড়ল জাপান

গত বছর অগাস্টে চাঁদে সফলভাবে অবতরণ করেছিল ভারতের চন্দ্রযান। এবার সে পথেরই অনুসারী হল এশিয়ার আরেক দেশ জাপান।

নিজস্ব প্রযুক্তিতে বানানো মনুষ্যহীন চন্দ্রযান ল্যান্ডার স্লিম (ডাকনাম ‘মুন স্নাইপার’) সফলভাবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করেছে বলে জানিয়েছে জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সা।

২০ মিনিটের রুদ্ধশ্বাস সময়ের পর হালকা পালকের মতো শুক্রবার ১৫.০০ জিএমটি-তে চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে ল্যান্ডার। এর মধ্য দিয়ে চাঁদে সফলভাবে অবতরণ করা পঞ্চম দেশ হিসেবে ইতিহাস গড়েছে জাপান। এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন ও ভারত এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পেরেছে।

চন্দ্রযানের ট্র্যাকিং ডাটা দেখে জাক্সাপ্রধান কুনিনাকা বলেন, যেখানে নামার কথা ছিল সেখানেই স্লিম নেমেছে সে ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত তিনি।

তবে ঠিক কোন জায়গায় ল্যান্ডারটি রয়েছে এবং সেটি একেবারে ঠিকমত নামতে পেরেছে কিনা তা যাচাই করে দেখতে অন্তত দু’মাস সময় লাগবে বলেও জানান কুনিনাকা।

ওদিকে, স্লিম চাঁদের মাটিতে নামতে পারলেও বিজ্ঞানীরা বলছেন, চন্দ্রযানটির সোলার জেনারেটর কাজ করছে না। কেবল ব্যাটারির শক্তির ওপরই নির্ভর করছে যানটি।

ব্যাটারি শেষ হওয়ার আগেই তাই সোলার জেনারেটর ঠিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। ব্যাটারির শক্তি থাকবে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা।

চাঁদের বুকের একটি গর্ত সংলগ্ন এলাকাকে মহাকাশযান নামানোর আদর্শ জায়গা বলে বেছে নিয়েছিল জাক্সা। এই গর্তটির নাম ‘শিওলি গহ্বর’।

পৃথিবী থেকে চাঁদের সবচেয়ে কাছের এই অংশের (যে অংশ পৃথিবী থেকে দেখা যায়) ১০০ মিটারের (৩২৮ ফুট) মধ্যে হালকাভাবে স্লিম কে নামানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

যানটি নামার আগে দেখে নেওয়া হয়েছিল কোথাও কোনও বাধা রয়েছে কিনা। ৫০ মিটার দূর থেকে সেটি পরীক্ষা করে দেখা হয়। সেই মতো সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই পালকের মতো চাঁদের বুকে নেমে আসে চন্দ্রযান।

গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর স্লিম এর সফল উৎক্ষেপণ করেছিল জাপান। গত ২৫ ডিসেম্বর চাঁদের কক্ষপথে যানটি প্রবেশের কথা জানিয়েছিল জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।

স্লিমের অবতরণের পর এবার চাঁদের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা চলবে। চাঁদের জন্ম, বিবর্তন নিয়ে তুলে আনা হবে অনেক নতুন তথ্য।

জাপানের ল্যান্ডার স্লিম (স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেশন মুন) থেকে যে রোভার নামবে চাঁদের বুকে, তা এক্স-রে ছবি তুলবে। কৃষ্ণগহ্বর, নিউট্রন স্টার এবং সুপারনোভার উচ্চ মানের এক্স-রে তুলে জাপানের মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রে পাঠানো হলে সেগুলোর গঠন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাবেন বিজ্ঞানীরা।