তিন কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন
সিঙ্গাপুরের দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে তিন কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছে
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে এক হাজার ২৭৪ কোটি ১১ লাখ টাকা খরচ ধরা হয়েছে।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়।
আসন্ন সেচ ও গ্রীষ্ম মৌসুমে বাড়তি চাহিদা মেটাতে তিন সপ্তাহে মোট পাঁচ কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হলো।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের জানান, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠান ‘এম এস গুলবার্গ’ থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে খরচ হবে প্রায় ৮৫১ কোটি ৫১ লাখ টাকা। প্রতি ইউনিট বা এমএমবিটিইউর (ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট) দাম পড়ছে ৯ দশমিক ৮৪৭০ ডলার। এর আগের লটে ইউনিটপ্রতি দাম ছিল ৯ দশমিক ৯৩০ ডলার। সিঙ্গাপুরের আরেক প্রতিষ্ঠান এম এস ভিটল এশিয়া থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রতি এমএমবিটিইউর মূল্য পড়ছে ৯ দশমিক ৭৭০ ডলার।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠকে শ্রীকাইল গ্যাস ক্ষেত্রের জন্য ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়েলহেড কম্প্রেসর কেনাসহ সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের একটি প্যাকেজ ও নদী খনন-সংক্রান্ত দুটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়।
এর আগে গত ৩১ শে জানুয়ারি সিঙ্গাপুরের ভিটল এশিয়া থেকে ৪২৯ কোটি ৪০ লাখ টাকায় এক কার্গো এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এ ছাড়া গত ২৩ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ড-ভিত্তিক টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। তখন প্রতি ইউনিটের দাম পড়ে ১০ দশমিক ৮৮ ডলার।
২০২২ সালের শুরুতে আন্তর্জাতিক বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠায় প্রতি ইউনিট ৪০ ডলার দরে এলএনজি কিনতে হয়েছিল সরকারকে। পরে সেই দাম প্রায় ৫৬ ডলারে উন্নীত হয়। এক পর্যায়ে খোলা বাজার থেকে সরকারও এলএনজি কেনা স্থগিত রাখে। প্রায় আট মাস বিরতি দিয়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুতে আবার এলএনজি কেনা শুরু করা হয়। প্রথমবার প্রতি ইউনিটের দাম পড়েছিল ২০ ডলারের কাছাকাছি। এর পর দাম ধীরে ধীরে কমে আসছে।
সরকারি ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের বলেন, গরম মৌসুমে প্রচুর গ্যাস দরকার। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু রাখতে হবে। তাই নিজস্ব গ্যাসের পাশাপাশি এলএনজি আমদানি বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ৬০ শতাংশ এবং স্পট মার্কেট থেকে ৪০ শতাংশ এলএনজি আমদানি করা হয়। কারণ দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় গ্যাসের দাম একই থাকে। এখন তা প্রায় প্রতি ইউনিট ১২ ডলারের মতো। অন্যদিকে স্পট মার্কেটে দাম ৯ ডলারের কিছু বেশি। এ কারণেই উভয় মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করা হয়।