নাইজেরিয়া যুক্তরাষ্ট্রে তেল বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে
পাথরের খনি থেকে প্রাপ্ত তেলের (শেল) উত্তোলন বৃদ্ধির কারণে প্রথম দেশ হিসেবে নাইজেরিয়া যুক্তরাষ্ট্রে তেল বিক্রি পুরোপুরিই বন্ধ করে দিয়েছে। চার বছর আগেও আফ্রিকার এ দেশটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পাঁচটি তেল সরবরাহকারকের অন্যতম। খবর ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ১৯৭৩ সালে দুই দেশের মধ্যে তেল বাণিজ্যের হিসাব লিপিবদ্ধ করার পর গত জুলাইয়ে প্রথমবারের মতো নাইজেরিয়া যুক্তরাষ্ট্রে এক ব্যারেল তেলও রফতানি করেনি। একই ধারা বজায় থেকেছে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরেও।
তেল উত্তোলনে নতুন প্রযুক্তির আগমনে উত্তোলন বাড়াতে পেরেছে মার্কিন উত্তোলকরা। ফলে অনেক দিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে অন্যান্য দেশের তেল রফতানি কমে আসছিল। কিন্তু নাইজেরিয়াই প্রথম দেশ, যেটি যুক্তরাষ্ট্রে তেল রফতানি পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে।
২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র সর্বোচ্চ দৈনিক ১৩ লাখ ব্যারেল তেল আমদানি করেছিল নাইজেরিয়া থেকে। ২০১২ সালে তেল বিক্রির পরিমাণ কমে আসে দৈনিক ৫০ লাখ ব্যারেলে। তার পরও সৌদি আরব, কানাডা, মেক্সিকো ও ভেনিজুয়েলার পর যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম শীর্ষ তেল সরবরাহকারী হিসেবে নাইজেরিয়ার অবস্থান বজায় ছিল। এ বছরের শুরুর দিকে সরবরাহের পরিমাণ ১ লাখ ব্যারেলের নিচে নেমে আসে এবং জুলাইয়ে তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
নাইজেরিয়া তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের সদস্য এবং এক্সনমবিল, রয়েল ডাচ শেল, টোটাল ও শেভরনের বহুজাতিক তেল কোম্পানিগুলোর প্রভূত বিনিয়োগ রয়েছে দেশটির তেল কূপগুলোয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রে শেল গ্যাসের উত্থানে সবার উত্তোলন সমানভাবে ব্যাহত হয়নি। এতে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হয়েছে নাইজেরিয়া, আলজেরিয়া, লিবিয়া ও অ্যাঙ্গোলার মতো আফ্রিকার দেশগুলো। এ দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রে নর্থ ডাকোটায় উত্তোলিত উচ্চমানের অপরিশোধিত তেলের সমমানের তেল উত্তোলন করায় তাদের রফতানি কমেছে।
মার্কিন পরিশোধনাগারগুলো যে মানের অপরিশোধিত তেল কিনে থাকে, তার চেয়ে কিছুটা নিম্নমানের হওয়ার কারণে সৌদি আরব ও কুয়েতের তেল রফতানি খুব একটা ব্যাহত হয়নি।
তবে এশিয়ায় সরবরাহ বাড়িয়ে নাইজেরিয়া এ ধাক্কা ভালোই সামাল দিয়েছে। চলতি বছর চীন, জাপান, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ায় দেশটির তেল রফতানির পরিমাণ ২০১৩ সালের পরিমাণের তুলনায় এরই মধ্যে ৪০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।