সাগরে ঘুর্ণিঝড় হুদহুদ

উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিুচাপটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এই ঝড়ের নামকরণ করা হয়েছে হুদহুদ। ওমানের অ্যাফ্রো-ইউরেসিয়ান পাখির নাম ‘হুদহুদ’ এর সঙ্গে মিল থেকে এই নাম করণ করা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখার সময়ে দক্ষিণ আন্দামান ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এ ঝড়টির গতিবেগ ছিলো ঘণ্টায় ৮৫ থেকে ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত। আগামী শুক্রবার ১১০ থেকে ১৪৫ কিলোমিটার গতিতে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার কিলোমিটার দক্ষিণে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছিল (১২.৩০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২.৯০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ)। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো-হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল অবস্থায় আছে। এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করার জন্য বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বর্তমান গতিপথ দেখে মনে হয়, ঝড়টি ভারতের অন্ধপ্রদেশ ও উড়িষ্যার দক্ষিণ অঞ্চলের দিকে এগুচ্ছে। তবে যে কোন সময় গতি পথ ঘুরে এটি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টি কলকাতা থেকে প্রায় ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করলেও আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বিশাখাপত্তনম ও গোপালপুর বা কলিঙ্গপত্তমের আশপাশে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বড় কোনো বিপর্যয়ের আশঙ্কা না থাকলেও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টি হতে পারে। আগামী সোমবার নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।