সার্ক বিদ্যুৎ সহযোগিতা চুক্তি সই
সার্ক বিদ্যুৎ সহযোগিতা চুক্তি সই হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ১৮তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিন কাঠমান্ডুর সিটি হলে চু্ক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আট দেশের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এই চুক্তিতে আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে, যার মধ্য দিয়ে সার্কভুক্ত এক দেশ সহজেই অন্য দেশ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে পারবে।
‘সার্ক ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট অন এনার্জি কো-অপারেশন’ শীর্ষক এ চুক্তি কাঠমান্ডুতে সংস্থাটির ১৮তম শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাক্ষরিত হয়। স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৪টায় সিটি হলে নেপালের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে সমাপনী অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
প্রথমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতার লক্ষ্যে ‘দক্ষিণ এশিয়ার জ্বালানি (বিদ্যুৎ) সহযোগিতা বিষয়ক রূপরেখা’ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন আট দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আফশরাফ ঘানি, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তেশেরিং তোবগে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুম এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্টানে উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তি সইয়ের পর নেপালের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সদস্য দেশের পরিবহন মন্ত্রীরা সার্ক যাত্রী পরিবহন মোটরযান চুক্তি ও সার্ক রেলওয়ে সহযোগিতা চুক্তির বিষয়ে আলোচনার জন্য আগামী ৩ মাসের মধ্যে বৈঠকে বসবেন।’
এর আগে সকালে অবকাশ যাপনে সার্কের পর্যবেক্ষক ৯টি দেশের প্রতিনিধি দলকে সঙ্গে নিয়ে শীর্ষ নেতারা হেলিকপ্টারযোগে গিয়েছিলেন কাঠমান্ডু থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে নেপালের অন্যতম নয়নাভিরাম পর্যটনকেন্দ্র ধুলিখেলের ‘দাওয়ারিকা রিসোর্ট’-এ। অবশ্য ঠাণ্ডাজনিত অসুস্থতার কারণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে যেতে পারেননি।
দাওয়ারিকা রিসোর্টে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে পারস্পরিক আলোচনায় বিদ্যুৎ সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে ঐকমত্য হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে ২০১৬ সালে অনুষ্ঠেয় ১৯তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠানের স্থান হিসেবে পাকিস্তানকে নির্ধারণ করা হয়। এরপর ৩৬ দফা কাঠমান্ডু ঘোষণা অনুমোদন করা হয়। নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা সমাপনী ভাষণ দেন।
সবশেষে সার্কের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের পক্ষে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সমাপনী বক্তৃতার মধ্য দিয়ে বিকেল ৫টায় ১৮তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন শেষ হয়।
এখন বাংলাদেশ নেপাল ও ভারতের মধ্যে আন্তঃদেশীয় বিদ্যুৎ সংযোগ আছে। ভারত নেপাল থেকে বিদ্যুৎ নিচ্ছে। বাংলাদেশ নিচ্ছে ভারত থেকে। সার্কভূক্ত অন্য আটটি দেশকেও এই সংযোগের মধ্যে আনা হবে। তখন যে কোন দেশ যে কোন দেশের উপর দিয়ে বিদ্যুৎ আনা নেয়া বা কেনাবেচা করতে পারবে। বাংলাদেশ ভারত উপর দিয়ে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনতে পারবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশও বিদ্যুৎ পাঠাতে পারবে। এভাবে দামের সমন্বয় হলে যে কোন দেশ দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ আনা নেয়া করতে পারবে।
সার্ক চুক্তি আলোকে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতে এর সুবিধা ভোগ করতে পারবে। এই চুক্তির মাধ্যমে যেসব দেশে বেশি বিদ্যুৎ ঘাটতি আছে তারা উদ্বৃত্ত থাকা দেশ থেকে আনতে পারবে। তাছাড়া যেখানে কম মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব সেখানেও যাদের প্রয়োজন তারা বিনিয়োগ করতে বিদ্যুৎ আনতে পারবে।