মেলায় আসলেই নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ
সায়েদাবাদ থেকে এ কে এম আশরাফ এসেছেন বিদ্যুৎ মেলায়। বাসায় নতুন একটি মিটার প্রয়োজন। মেলায় এসে আবেদন করেছেন। সাথে সাথে বিদ্যুতের নতুন সংযোগ পেয়েছেন।
খুশি মনে এম আশরাফ বলেন, আগে সায়েদাবাদ অফিস থেকে ২০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। অনেকদিন আগে নতুন মিটারের জন্যে আবেদন করেছি। কিন্তু পাইনি। এখন নতুন মিটার পেয়ে খুশি। এমন যদি সব ক্ষেত্রে সারাবছর থাকে তবে আরও খুশি।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিদ্যুৎ মেলায় এই সেবার ব্যবস্থা করেছে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষ (ডিপিডিসি)।
আবু সালেহ মন্টু বংশাল থেকে এসেছেন বিদ্যুৎ মেলায়। প্রথমে ভাবেননি এমন হবে। তবু আশা। একেবারে চমকে গেলেন। একদিনে নয় এক ঘন্টায় পেয়ে গেলেন নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের চাহিদাপত্র। আশা করছেন আজই (শুক্রবার) নতুন মিটারে বিদ্যুতের আলো জ্বালাবেন। তিনি বলেন, জীবনে আর কখনও এমন দেখিনি। বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে শুধু অনেক সময় লাগে তাই নয় টাকাও দিতে হয় বাড়তি। এমনই জানা ছিল। কিন্তু এখন সেই ধারণা পাল্টে গেল।
এম আশরাফ, আবু সালেকের মত অধ্যাপক মো. উল্লাহসহ ১০৮জনকে মেলায় নতুন সংযোগ দেয়া হয়েছে। আজ শনিবারও একইভাবে মেলায় এই সেবা দেবে ডিপিডিসি। নতুন সংযোগ ছাড়াও ডিপিডিসি ৪৫জনের বিদ্যুতের লোড বাড়িয়ে দিয়েছে। বকেয়া থাকা বিদ্যুতের বিলও দেয়া হচ্ছে কিস্তি করে।
ডিপিডিসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) মো. নজরুল হাসান বলেন, গ্রাহকদের অনেক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। প্রথমদিন থেকেই গ্রাহকরা তাদের সমস্যার কথা জানাচ্ছেন। আমরাও সাথে সাথে তা সমাধান করছি। নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ নিতেও আসছেন অনেকে। তাদের সকল কাগজপত্র পরীক্ষা করে সাথে সাথে চাহিদাপত্র দিচ্ছি। পরে গ্রাহকরা বাড়িতে মিটার লাগালে একদিনের মধ্যেই সংযোগ দেয়া হচ্ছে।
সংযোগ পেতে দুই কপি ছবি, রাজউক অনুমোদিত বাড়ির নকশা, সিটি কর্পোরেশনের হোল্ডিং নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং আবেদনপত্র প্রয়োজন হবে।
মেলায় উৎস ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্ভাবনী যন্ত্র নিয়ে এসেছেন দশম শ্রেণীর ছাত্র বিনয় প্রামানিক। নাটোরের বনপাড়ায় সেন্টজোসেফ হাইস্কুলের ছাত্র সে। উদ্বাবন করেছেন উৎস ছাড়া বিদ্যুৎ। প্রথমে তিন সেকেন্ড বিদ্যুৎ নিয়ে সেটাকে পরে ক্রমাš^য়ে বাড়িয়ে তিন বছর একটানা ব্যবহার করার পদ্ধতি আবিস্কার করেছেন তিনি। অর্থাৎ প্রথমে তিন সেকেন্ড বিদ্যুৎ নিয়ে সেই বিদ্যুৎ প্রাথমিক জ্বালানি হচ্ছে। একটা অংশ প্রাথমিক জ্বালানি হচ্ছে। আর একটা অংশ ব্যবহার হচ্ছে। ব্যবহার করা বিদ্যুৎ আবার প্রাথমিক জ্বালানি হয়ে নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।
এধরণের নানা উদ্ভাবন সাথে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতি, সৌর বাতি, বায়ু বিদ্যুৎ, বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইত্যাদি বিষয় আছে মেলায়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য প্রদর্শনি করছেন। জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষকে কিভাবে কোথায় বিদ্যুতের যন্ত্রাংশ প্রয়োজন হয়। অনেকে করছেন বিক্রিও। সেক্ষেত্রে আছে বিশেষ ছাড়। একটি ৫৬ হাজার টাকার জেনারেটর মেলায় বিক্রি হচ্ছে ৫০ হাজার টাকায়। বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন, বিতরণসহ সকল কার্যক্রমের সাথে সম্পর্কিত কোম্পানি প্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশ নিয়েছে।
মেলায় যেমন আসছেন সাধারন আগ্রহীরা তেমনই আসছেন প্রকৌশলীরা। গতকাল শুক্রবার বিকালে মেলায় দর্শকের উপচে পড়া ভীড় ছিল। লম্বা লাইনে দাড়িয়ে মেলায় দর্শনার্থীদেও ঢুকতে দেখা গেছে।