গ্যাস তেল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বিশেষ বৈঠক করবেন
ভারত থেকে পাইপলাইনে তেল আমদানি, কয়লানীতি, নতুন গ্যাস সংযোগ, এলএনজি টার্মিনাল, গ্যাস অনুসন্ধান, গভীরসমুদ্রে গেল গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশীদের সাথে চুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে গ্যাস ও জ্বালানি তেলের বিভিন্ন প্রকল্পের উন্নয়ন নিয়ে এ বৈঠক হবার কথা রয়েছে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, বর্তমান জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় ভারতের দিঘা সমুদ্র বন্দর দিয়ে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এনে তা আবার পাইপে করে আমদানির বিষয়ে আলোচনা চলছে। দুই দেশের মধ্যে এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা চলছে। একই সাথে ভারত থেকে পাইপ লাইনে জ্বালানি তেলও আমদানির বিষয়ে আলোচনা চলছে। প্রধানমন্ত্রীর সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করে ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা হবে।
কয়লানীতি চূড়ান্ত করার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই ঝুলে আছে। কয়লানীতি দ্রুত চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নীতি চূড়ান্ত করার সাথে কয়লা উত্তোলনের বিষয়টি জড়িত। দেশীয় কয়লা দিয়ে বড়পুকুরিয়া নতুন একটি বিদ্যুৎ ইউনিট স্থাপন করা হবে। এছাড়া আমদানি করা কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য কয়লা আমদানির বিষয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত আছে।
গ্যাসের মজুদ বাড়াতে নানা পরিকল্পনা করা হয়েছে। মোবারকপুর তেল গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খনন কাজ এবছর জুনে শেষ হওয়ার কথা। আশুগঞ্জ ও এলেঙ্গায় কম্প্রেসার স্টেশন স্থাপন শেষ হওয়ার কথা সেপ্টেম্বর মাসে। এডিবি’র ঋণে এই স্টেশন স্থাপন করা হচ্ছে। ঢাকাসহ আশপাশে গ্যাসে চাপ বাড়াতে এই স্টেশন স্থাপন করা হচ্ছে। আশুগঞ্জ – বাখরাবাদ গ্যাস পাইপ লাইন স্থাপন, সালদা ও ফেঞ্জুগঞ্জ ক্ষেত্রের উন্নয়নসহ বিভিন্ন প্রকল্প চলমান আছে। বাপেক্সকে শক্তিশালী করতে নানা পরিকল্পনা করা হয়েছে। এজন্য বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রে কী ধরণের কাজ হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে কী কাজ হবে সেই পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হবে। বিশেষ করে দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক জরিপ নিয়ে বাপেক্স কাজ করছে। তিতাস গ্যাসের গ্রাহক সেবা বাড়াতে বিশেষ প্রকল্প নেয়া হয় ২০১০ সালে। এবছর জুনে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা। এছাড়া দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস বিতরণ প্রকল্প সহ বিভিল্পু বিষয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হবে বলে জানা গেছে।
গ্যাস উন্নয়ন তহবিল এর অর্থ ব্যবহার নীতিমালা পরিবর্তন করা হচ্ছে। খসড়া উন্নয়ন নীতিমালা এবং এর অর্থ কোনখাতে কীভাবে ব্যবহার হবে তার দিকনির্দেশনা নিয়েও আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। চলতি অর্থবছর গ্যাস উন্নয়ন তহবিল থেকে ৩৪টি প্রকল্পের জন্য দুই হাজার ১৫৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
জ্বালানি বিভাগ সহৃত্র জানায়, বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমেছে। কিন্তু দেশে কমানো হয়নি। এর সার্বিক বিষয় নিয়ে আজ আলোচনা করা হবে।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে বার্ষিক উল্পুয়ন কর্মসুচীতে মোট ৫৮টি প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ করা আছে। এরমধ্যে ২১টি বিনিয়োগ, একটি কারিগরি সহায়তা, দুইটি জেডিসিএফ এবং ৩৪টি সংস্থা বা কর্পোরেশনের নিজস্ব টাকায় করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছর এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চার হাজার ৩৭৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এরমধ্যে সরকারিভাবে আছে তিন হাজার ৮৬৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা। বাকী ৫০৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা প্রকল্প সাহায্য।