১২০০ কোটি ডলার ঋণ দেবে রাশিয়া, সুদের হার ৪ শতাংশ

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে এক হাজার ২০০ কোটি ডলার  ঋণ দেবে রাশিয়া। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী  এর পরিমান প্রায় ৯৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। প্রতিশ্রুত ঋণের সুদ হার হবে সবোর্চ্চ চার শতাংশ। ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ড়সহ ২৮ বছরে সুদ-আসলে এ ঋণ  শোধ করতে হবে। এ অর্থে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা করে দুটি বিদ্যুৎ ইউনিট স্থাপন করা হবে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সফররত রাশিয়ার অ্যাটোমিক ইনার্জিং কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান এন এন পাসকিটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়ন করতে আরও দুটি চুক্তি করতে হবে। একটি হবে মূল চুক্তি তথা  নির্মাণ বিষয়ে। অপরটি ঋণ চুক্তি। প্রথম চুক্তিটি আগামী এক মাসের মধ্যে করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। কিন্তু আমাদের পক্ষ থেকে সময় চাওয়া হযেছে। বলেছি এটি একটি বড় প্রকল্প। তাড়া হুড়ো করলে হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তার পর সিদ্ধান্ত হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় প্রকল্প। সে জন্য অর্থায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বিশদ আলোচনা করতে হবে। তিনি বলেন, পারমাবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ এর দাম হবে সাশ্রয়ী।
রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র  বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের একটি। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে মোট খরচ হবে এক হাজার ৩৫০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৯০ ভাগ ঋণ দেবে রাশিয়া। বাকি টাকা জোগান দেবে সরকার।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে এ পর্যন্ত তিনটি চুক্তি করা হয়েছে। বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশন রাশিয়ার রোসাটমের সাথে এই চুক্তি করেছে।
এ কাজের জন্য রাশিয়া এর আগে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। শিগগিরই একাজ শুরু করতে চায় রোসাটাম।  সে জন্য আলোচনা করতে রোসাটমের ভাইস চেয়ারম্যান অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রথম ও দ্বিতীয় চুক্তির শতভাগ এবং তৃতীয় চুক্তির ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এখন নতুন দুটি চুক্তি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু করা হবে।
পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করবে রাশিয়া। একই সঙ্গে  মেরামত – রক্ষণাবেক্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়ন, মানব সম্পদ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা ইত্যাদি বিষয়ে রাশিয়া সহায়তা দেবে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সমীক্ষা শেষ হয়েছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, রূপপুরে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে কোন সমস্যা নেই। সেখানে ভূমিকম্প, প্রাকৃতিক দুযোর্গ, মাটি, পানি, বাতাস বিষয়ে সমীক্ষা করা হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়টি সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। রাশিয়ার  চেরনোবিল ও জাপানের ফুকুশিমা দুর্ঘটনার পর নতুন করে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। নতুন প্রযুক্তি বাংলাদেশে দেয়া হবে। বাংলাদেশে প্রথমে ভিভিইআর-১০০০ প্রযুক্তি দেয়ার কথা ছিল এখন ভিভিইআর-১২০০ প্রযুক্তির বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হবে।