খেলোয়াড়দের গৌরবে আলো পেল কলসিন্দুর গ্রামবাসী

খেলোয়াড়দের গৌরবে আলো পেল কলসিন্দুর গ্রামবাসী। একই এলাকার ১৯ কিশোরী ফুটবল খেলে গৌরব কুড়ালো। আর সেই গৌরবকে সন্মান দেখিয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) পুরো গ্রামে দিল বিদ্যুৎ।
শনিবার ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর আওতাধীন ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর গ্রামের ১৯ কিশোরী পরিবারসহ কয়েকটি গ্রামের ৮০৩ পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়।
এই বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন, কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, ধোবাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আ¦ন্ধুল মান্নান আকন্দসহ অনেকে। এসময় কৃতি খেলোয়াড়রাও উপস্থিত ছিলেন। বিদ্যুৎ সংযোগ অনুষ্ঠানে কৃতি খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা দেয়া হয়।
ধোবাউড়া উপজেলার কলাসিন্দুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ২০১৩ ও ২০১৪ সালে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়। এ ছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে নেপালে অনুষ্ঠিত এএফসি (এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন) কাপে নেপালকে ১-০ গোল এবং ভুটানকে ১৬-০, ইরানকে ২-০ গোলে হারিয়ে আঞ্চলিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ান হয়। এ‌এফসি কাপে বিজয়ী ওই দলের ১৮ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে ১০ জনেই এক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। এএফসি কাপে এই অদম্য ছাত্রীরা অসামান্য অবদান রাখলেও তাদের গ্রামে বিদ্যুৎ না থাকায় খেলা উপভোগ করতে পারেননি তাদের স্বজনসহ ঐ গ্রামের দর্শকরা। বিষয়টি সরকারের নজরে আসার পরই এই গ্রামে বিদ্যুৎ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর, গামারীতলা, পশ্চিম গামারীতলা, পঞ্চনন্দপুর, দক্ষিণ রানীপুর, মুক্তাগাছা, রামসিংহপুর, গৌরীপুর ও সোহাগীপাড়া গ্রামে মোট ১৪ হাজার ৮২৯ কিলোমিটার লাইন স্থাপন করা হয়েছে। এজন্য এক কোটি ৭৮ লাখ টাকা খরচ হয়।
অনুষ্ঠানে নসরুল হামিদ বলেন, অর্থ আর এখন কোন সমস্যা নয়। আরও উদ্যোমী হয়ে আগামী প্রজন্মের জন্য উন্নত বাংলাদেশ গড়তে বিদ্যমান সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা দরকার। তিনি বলেন, সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রুত কাজ করছে। ২০১৮ সালের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। এরইমধ্যে ৭৪ ভাগ জনগোষ্ঠি বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। প্রতিমন্ত্রী কিশোরী এই খেলোয়াড় আরও যত্ন সহকারে খেলাধুলা চর্চা ও পড়াশোনার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, তোমরা যেমন দেশের সম্মান বয়ে এনেছো। তেমনি তোমাদের সম্মান বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হবে। তোমাদের জন্যই কলসিন্দুর গ্রাম আজ দেশবাসীর কাছে পরিচিত। সমাজকণ্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রত্যেক খেলোয়াড়কে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
এরআগে জাতীয় দলের ক্রিকেট খেলোয়াড় সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার মহিষের ডাঙ্গা গ্রামের সৌম্য সরকার এবং একই জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার বয়রা গ্রামের  মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়িতে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়।