খরচের তুলনায় গ্যাস পাচ্ছে না গ্যাজপ্রম

আশানুরূপ গ্যাস পায়নি গ্যাসপ্রম। কাজও শেষ করতে পারেনি পরিকল্পনা অনুযায়ি। ২০১৪ সালের জুলাই মাসের মধ্যে গ্যাজপ্রমের ১০টি কূপ খননের কাজ শেষ হওয়ার কথা। এখন পর্যন্ত ৭টি কূপ খনন করেছে। প্রতিটি কূপ থেকে আড়াই থেকে তিন কোটি ঘনফুট করে গ্যাস পাওয়ার আশা করা হলেও কোনো কূপেই দেড় কোটি ঘনফুটের বেশি গ্যাস পাওয়া যায়নি।
সংশি¬ষ্টরা বলছেন, গ্যাস ঘাটতি মেটাতে গ্যাজপ্রমকে বেশি দামে কাজ দেয়া হলেও এখন আশানরূপ গ্যাস পাওয়া যায়নি। এর তুলনায় বাপেক্সকে দিয়ে কাজ করা হলে রাষ্ট্রীয় অর্থ কম খরচ হতো। তারা বলছেন, গ্যাজপ্রম নিজে কাজ না করে অন্য কোম্পানিকে ভাড়ায় এনে কাজ করানোয় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গ্যাজপ্রম উজবেকিস্তানভিত্তিক কোম্পানি এরিয়ালকে কূপ খননে কাজ করাচ্ছে।
২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল দেশের ছয়টি গ্যাসক্ষেত্রে ১০টি কূপ খননে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের সঙ্গে একটি ঠিকাদারি চুক্তি স্বাক্ষর করে পেট্রোবাংলার তিনটি কোম্পানি। বিদ্যুত্ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০-এর আওতায় এই চুক্তি করা হয়। এই কুপ খননে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার (১২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা)। অন্যদিকে কূপ খননে বাপেক্সের একটি কূপ খননে খরচ হয় গড়ে ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা।
চুক্তি অনুযায়ী গ্যাজপ্রম পেট্রোবাংলার আওতাধীন বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) তিতাস গ্যাসক্ষেত্রে চারটি, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্রে একটি উন্নয়ন কূপ ও বাপেক্সের সেমুতাং ক্ষেত্রে একটি, শাহবাজপুরে দুটি, শ্রীকাইলে একটি এবং বেগমগঞ্জে একটি কূপ খনন করার কথা।
গ্যাজপ্রম শ্রিকাইলের ৩ নম্বর কূপটি খনন করেছে। বর্তমানে এই কূপ থেকে দুই কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এরপর তিতাসের ২০ নম্বর কূপটি খনন করে। কিন্তু খননের স্থান ঠিক না হওয়ায় কূপে পানি চলে আসে। এরপর আবার নতুন করে কাজ শুরু করে তারা। বর্তমানে এই কূপ থেকে মাত্র এক কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। তিতাসের ২১ নম্বর কূপ থেকে দেড় কোটি ঘনফুট, ২২ নম্বর থেকে ১ দশমিক ২ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। তিতাসের ১৯ নম্বর কূপটি খনন কাজ সম্প্রতি শেষ করেছে গ্যাজপ্রম। এ কূপ থেকে দেড় কোটি ঘনফুট নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রের কূপটি থেকে দুই কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। এছাড়া সেমুতাং এর কূপটি থেকে মাত্র ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। এ হিসেবে ৭টি কূপ থেকে প্রায় ১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে।