১০-১৫ মার্চ সুন্দরবনমুখী জনযাত্রা
সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল ও এরপাশের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ বন্ধের দাবি জানিয়েছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধসহ সাত দফা দাবি আদায়ে আগামী ১০-১৫ মার্চ ঢাকা থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত জনযাত্রা কর্মসূচি ঘোষনা করেছে।
শনিবার ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে কমিটির পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মহাম্মদ। এসময় কমিটির নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, বজলুর রশীদ ফিরোজ, জোনায়েদ সাকী, প্রকৌশলী কল্লােল মোস্তফা, আজিজুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম ফজলু, বহ্নী শিখা জামালী, ফখরুদ্দিন কবির আতিক, মহিন উদ্দিন চৌধুরী লিটনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সুন্দরবনমুখী জনযাত্রা সফল করতে ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে প্রতিবাদ ও দাবি সমাবেশ এবং ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়।
এসময় বলা হয়, বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প আছে, সুন্দরবনের কোন বিকল্প নেই। পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, প্রাণ-বৈচিত্রের অসাধারণ আধার এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচাইতে শক্তিশালী প্রাকৃতিক রক্ষাবর্ম সুন্দরবন। সুন্দরবনের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বাঁচে। সুন্দরবন নষ্ট হওয়া মানে বহু মানুষের জীবিকা হারানো, উপকূলীয় অঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষকে মৃত্যু ও ধ্বংসের হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া। একদিকে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে সুন্দরবন হত্যার আয়োজন চলছে, অন্যদিকে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র সামনে রেখে দেশের নানারকম প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। সুন্দরবনের পাশে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে।
জাতীয় কমিটি যে ৭ দফা দাবি জানিয়েছে তা হল, সর্বজনের সম্পদে শতভাগ মালিকানা ও শতভাগ সম্পদ দেশের কাজে ব্যবহার, দুর্নীতি করবার দায়মুক্তি আইন বাতিল করে খনিজ সম্পদ রফতানি নিষিদ্ধকরণ আইন প্রণয়ন, পিএসসি প্রক্রিয়া বাতিল করে স্থলভাগে ও সমুদ্রে নতুন নতুন গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধানে জাতীয় সংস্থাকে প্রয়োজনীয় সুযোগ, ক্ষমতা ও বরাদ্দ দেয়া, রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু মেরামত ও নবায়ন, এশিয়া এনার্জিকে (জিসিএম) দেশ থেকে বহিস্কার ও উম্মুক্ত খনন পদ্ধতি নিষিদ্ধসহ ফুলবাড়ী চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন, জাতীয় সম্পদের উপর জাতীয় কর্তৃত্ব নিশ্চিত করবার জন্য জাতীয় সক্ষমতার বিকাশ, পরিবেশ ও জনস্বার্থ নিশ্চিত করার মাধ্যমে নবায়নযোগ্য ও অনবায়নযোগ্য জ্বালানী সম্পদের সর্বোত্তম মিশ্রণ ঘটিয়ে একটি জ্বালানী নীতি করা এবং জনশক্তি তৈরির কাজ শুরু করা এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদে নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ওপর গুরুত্ব দেয়ার দাবি জানানো হয়।