চলছে কৃত্রিম জ্বালানি তেল সংকট
পেট্রোলপাম্পে তেল সংকট চলছে। জ্বালানি তেলের দাম কমানোর ঘোষনার পর জ্বালানি তেল পাম্প মালিকরা ডিপো থেকে তেল তোলা কমিয়ে দিয়েছে। এজন্য পাম্পে পাম্পে তেল সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রাহক পাম্পে গিয়েও প্রয়োজনীয় তেল পাচ্ছে না।
জানা গেছে, সারাদেশে শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত অন্তত ২৫০টি পাম্পে তেল নেই। তারা নতুন করে তেলও নিচ্ছে না। এরমধ্যে ঢাকা শহরে থাকা প্রায় ১০০টি পাম্পের মধ্যে সাতটিতে তেল না থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপো সূত্র জানিয়েছে, গত তিন দিন ধরে তাদের তেল বিক্রি কমছে।
রাজধানি ও এর আশপাশে কয়েকটি পেট্রোল পাম্পে খোঁজ নিয়ে জানা, তেলের পরিমান কম। পাম্প থেকে তেল কম নিতে বলা হচ্ছে। মালিকরাও ডিপো থেকে তের তুলছেন না।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এনার্জি বাংলাকে বলেন, এটা সাময়িক সংকট। দ্রুত সময়ে তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। তিনি বলেন, ফার্নেস তেলের দাম কমানো হয়েছে। এখন অন্য জ্বালানি তেলে দামও কমানো হবে। দাম কমানোর পর এ সমস্যা কেটে যাবে।
পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল হক এনার্জি বাংলাকে বলেন, হঠাৎ তেলের দাম কমলে মজুদ তেলের জন্য লোকসান দিতে হবে। এজন্য ব্যবসায়ীরা স্বাভাবিকভাবেই তেল উত্তোলন কমিয়ে দিয়েছে। আর এতে সংকট কিছুটা হতেই পারে। এভাবে আগাম তেলের দাম কমানোর কথা বলা ঠিক নয়। এটা সরকারের নীতি নির্ধারকদের করা উচিত নয়। যে সংকট তৈরী হয়েছে তার জন্য দায়ী নীতি নির্ধারকরা। তেলের দাম কমানো কিম্বা বাড়ানোর কথা আগাম বলা ঠিক নয়।
গত সপ্তাহে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এরপর থেকে এই সংকট শূরু হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে তেলের দাম কমানোর ঘোষণা সত্ত্বেও আনুষ্ঠানিকভাবে তা কার্যকর না করায় ঢাকাসহ সারাদেশের পেট্রোল পাম্পগুলোতে তেল সংকট চলছে। জ্বালানি তেলের দাম কমতে পারে সরকারের এই ঘোষণায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তেলের পাম্পগুলোতে তেল উত্তোলন কমে গেছে। চাহিদার তুলনায় তেল পাওয়া যাচ্ছে না পেট্রোল পাম্পগুলোতে। হয়রানির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। যেকোনো দিন তেলের দাম কমতে পারে। এই ঘোষণার পর থেকেই এই অবস্থা শুরু। বর্তমান দামে এখন তেল কিনতে চাইছেন না পাম্প মালিক। দাম কমলেই অবশিষ্ঠ থাকা তেলে লেকসান দিতে হবে। এই শংকায় ডিপো থেকে তেল তোলা কমিয়ে দিয়েছেন।
গত ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ৪ এপ্রিল জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তিন ধাপে তেলের দাম কমানোর পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন। ৭ এপ্রিল তেলের দাম কমানোর প্রস্তাব জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এ অবস্থায় বিপিসির ডিপোগুলো থেকে তেল কেনা কমিয়ে দিয়েছেন পাম্প মালিকরা।
গত সপ্তাহে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এরপর থেকে এই সংকট শুরু । প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো প্রস্তাবে ডিজেল, কোরোসিন, অকটেন, পেট্রোলের দাম কমানোর কথা বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পাওয়ার পর জ্বালানি বিভাগ থেকে নতুন দামের প্রজ্ঞাপন করা হবে।
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো প্রস্তাবে ডিজেল, কোরোসিন, অকেটেন, পেট্রোলের দাম কমানোর কথা বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পাওয়ার পর জ্বালানি বিভাগ থেকে নতুন দামের প্রজ্ঞাপন করা হবে।
বর্তমানে অকটেন ৯৯, পেট্রোল ৯৬, ডিজেল ও কেরোসিন ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত ৩১ মার্চ এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ফার্নেস তেলের দাম ১৮ টাকা কমিয়ে ৬০ থেকে ৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এখন অন্য জ্বালানি তেলের দামও কমানোর উদ্যোগ চলছে।