রামপাল নিয়ে বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করবো না: জাতীয় কমিটি

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে বিএনপির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করবে না বলে জানিয়েছে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। সোমবার সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তিভবন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করলে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে রাজি আছে।
এর আগে রামপাল বিষয়ে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া উভয়েই সংবাদ সম্মেলন করেন। তাদের সংবাদ সম্মেলনের জবাব দিতেই এই সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় কমিটি।
গতকালের সংবাদ সম্মেলনে আনু মোহাম্মদ অভিযোগ করেন, দশ বছর আগে ফুলবাড়ি আন্দোলনে বিএনপি সরকার হামলা চালিয়েছে, আওয়ামী লীগ সমর্থন দিয়েছিল। আবার রামপাল আন্দোলনে আওয়ামী সরকার হামলা করছে। বিএনপি সমর্থন দিচ্ছে। দুই দলের চরিত্র একই রকম। রামপাল ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে কোনো ঐক্য সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, এ আন্দোলনে ক্ষমতাভোগী দলগুলো পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন নেই। আন্দোলনের খরচ নিয়ে শেখ হাসিনার কটাক্ষের বিষয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন ফুলবাড়ী আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছিলেন, তখন যেভাবে খরচ জোগাড় কার হতো, এখনো সেভাবেই ব্যয় মেটানো হয়।
কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছেন, রামপাল প্রকল্প বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, গরম পানি পশুর নদীতে ফেলা হবে না। কিন্তু পশুর নদীতে যে স্বাভাবিকের চেয়ে ২ ডিগ্রী বেশি গরম পানি ফেলা হবে সেটা খোদ কোম্পানিরই রিপোর্টে বলা হয়েছে। এছাড়া জাইকার একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে পানির তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত বাড়বে, যা মাছের বংশ বাড়ানোর জন্য ক্ষতিকর। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,বড়পুকুরিয়ায় কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে না। ২০১৪ সালে হয় এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে রাজশাহী প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয় থেকে গবেষণা চালানো হয়। এতে বলা হয়েছে, বড়পুকুরিয়ার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে ভূগর্ভস্থ পানি দূষিত হচ্ছে। তিলাই নদীতে কোনো পরিশোধন ছাড়াই পানি ছাড়া হচ্ছে। আশপাশের বহু মানুষের চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েেছ। শেখ হাসিনা ভার্জিনিয়ার কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন এতে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে না। এই কেন্দ্র পরিচালনা করে আমেরিকান ইলেক্ট্রিক পাওয়ার কোম্পানি। ২০১৪ সালে ক্লিন ওয়াটার অ্যাক্ট লংঘন করে পানি দূষণ করার জন্য এই কোম্পানিকে আদালত জরিমানা করে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।
জাতীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, বজলুর রশীদ ফিরোজ, প্রকৌশলী বিডি রহমতউল্লাহ, অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, মোশরেফা মিশু প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।