রামপাল বাতিলে নরেন্দ্র মোদীকে জাতীয় কমিটির চিঠি

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া বাতিলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছে তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।

মঙ্গলবার কমিটির পাঁচজনের প্রতিনিধিদল চিঠিটি ভারতের হাইকমিশনে পৌছে দেন।

এর আগে দুপুরে চিঠি নিয়ে হাইকমিশনের দিকে মিছিল করে যেতে চাইলে রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের বাঁধার মুখে পরে কমিটির সদস্যরা। এসময় জলকামান ও কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহার করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। হামলার প্রতিবাদে ২০শে অক্টোবর ঢাকাসহ সারা​দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

বেলা ১২টার দিকে চিঠি দেয়ার উদ্দেশ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করে জাতীয় কমিটি। গুলশানের হাইকমিশনের দিকে মিছিল নিয়ে তারা যাওয়ার সময় মৌচাক ও মালিবাগ রেলক্রসিংয়ে দুই দফা পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। মৌচাকের বাধা পেরোতে পারলেও রেলক্রসিংয়ে ব্যারিকেড ঠেলে এগোতে পারেনি। এসময় পুলিশ জলকামান ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে।

এ ঘটনার পর জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ জানান, তাদের মিছিলটি মালিবাগ পার হওয়ার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে জলকামান ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল সেই চিঠি ভারতীয় হাই কমিশনে জমা দিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গত ২৮ জুলাই যখন চিঠি দিতে গিয়েছি তখনও আমাদের উপর লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এরপরও চিঠি পৌঁছে দিয়েছিলাম কিন্তু তার জবার পাইনি। এমন বাধা দিয়ে এ আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।

সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স জানান, আহতদের মধ্যে সজীব নামে ছাত্র ইউনিয়নের এক নেতার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে মালিবাগের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে​ছে।

এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে জাতীয় কমিটি। সমাবেশে বিপ্ল­বী ছাত্র  মৈত্রী, গণসংহতি আন্দোলন, ছাত্র ফেডারেশন, সিপিবি-বাসদ, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য  ফোরাম, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে আনু মোহাম্মদ বলেন, সরকার যৌক্তিক দাবি বার বার প্রত্যাখ্যান করছে। যেহেতু সুন্দরবনের কাছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করলে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের অংশ ক্ষতি হবে, তাই এই বিষয়টি তুলে ধরার জন্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাংলাদেশের নাগরিকদের পক্ষ থেকে খোলা চিঠি দেয়া হচ্ছে।

খোলা চিঠিটি পাঠ করেন আনু মুহাম্মদ। চিঠিতে প্রকল্পটি বাতিলের আহ্বান জানানো হয়। বলা হয়, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যদি বাংলাদেশে করতেই হয়, তাহলে অন্য কোথাও করা হোক। সেখানে পরিবেশের এত বড় ক্ষতি হবে না। কিন্তু সুন্দরবন একটি। এটিকে ধ্বংস করা চলবে না। তাঁরা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে প্রকল্পটি বাতিলের আহ্বান জানান।

সমাবেশের অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানজিম আহমেদ।

এদিকে রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবিতে আগামী ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বর ‘চল চল ঢাকা চল’ কর্মসূচি পালন করবে জাতীয় কমিটি।