সাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘কায়ান্ট’

ঘুর্ণিঝড় কায়ান্টের কারণে দেশের চার সমুদ্র বন্দরে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এটি আরো ঘনীভূত হয়ে বাংলাদেশ অথবা ভারতের উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে। আগামী ২৮ অক্টোবর তা উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
নিম্নচাপের কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ এর আশেপাশের এলাকায় মাঝারি থেকে ভারি ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, এই মৌসুমে নিম্নচাপ হয়ে থাকে। তবে সব নিু চাপ ঘুর্ণিঝড়ে পরিণত হয় না। তিনি জানান, মঙ্গলবার সকালে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়েছে। এখন পর্যন্ত ঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথ ভারতের দিকে। তবে এখনো নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। কারণ ঘুর্ণিঝড় এগিয়ে চলার পথে বার বার গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে। এ হিসেবে বাংলাদেশেও এ প্রভাব পড়বে। আগামী ২৮ অক্টোবর তা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
জানা যায়, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলের তালিকা অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টির নাম রাখা হয়েছে কায়ান্ট। কায়ান্ট নামটি প্রস্তাব করেছিল মিয়ানমার। স্থানীয় ভাষায় যার অর্থ কুমির। এর আগের ঝড় রোয়ানুর নাম প্রস্তাব করেছিল মালদ্বীপ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘুর্ণিঝড়টি গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘণীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আবহাওয়ার অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, ঘুর্ণিঝড় কায়ান্টের কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দম্কা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের আশেপাশের এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ২ (দুই) নম্বর পুনঃ ০২ (দুই) নম্বর দুরবর্তী হুঁশিয়ারী সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেতের মানে হল- দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। বন্দরে এ ঝড়ের প্রভাব পড়ার আশঙ্কা আপাতত না থাকলে সাগরে থাকা জাহাজ ঝড়ের কবলে পড়তে পারে।