বঙ্গোপসাগরের দুটি ব্লকে দ্বিমাত্রিক জরিপ শুরু আজ
বঙ্গোপসাগরের অগভীর চার ও নয় নম্বর ব্লকে খনিজ অনুসন্ধানে দ্বিমাত্রিক জরিপ শুরু হচ্ছে। ভারতের ওএনজিসি ভিদেশ লিমিটেড এই জরিপ করবে।
আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রামের বোট ক্রাবে জরিপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হবে। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে ভারতের কোনো কোম্পানির এটিই প্রথম। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জরিপ শেষ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চুক্তি স্বাক্ষরের প্রায় দুই বছর পর চলতি বছরের ৮ই ফেব্রুয়ারি দ্বিমাত্রিক ভূকম্প জরিপ পরিচালনার সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি। অবশেষে আজ তা শুরু হচ্ছে। এ জন্য চীনা কোম্পানি সিনপ্যাককে নিয়োগ দিয়েছে ওএনজিসি। আর সিনপ্যাকের কাজ তদারকি করবে ওএনজিসি ও বাপেক্স।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ জানায়, ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ওএনজিসি অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের (ওআইএল) সাথে চুক্তি করে পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি বিভাগ। চীনের ভূতাত্ত্বিক সেবাদানকারী সংস্থা বিজিপিকে দুটি ব্লকের জরিপকৃত খনিজ সম্পদের পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য তৃতীয় পক্ষ হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, ৪নং ব্লকে ৮ বছরের মেয়াদের জন্য ওএনজিসিকে সরকারের কাছে গ্যারান্টি অর্থ রাখতে হবে ৫ কোটি ৮৪ লাখ ডলার এবং ৯নং ব্লকের জন্য রাখতে হবে ৮ কোটি ৬৪ লাখ ডলার।
পেট্রোবাংলার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, উপকূল এলাকা থেকে ২ হাজার মিটার লাইন পর্যন্ত জরিপ এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মডেল পিএসসি-২০১২’র শর্ত অনুযায়ী তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কাজে অন্তত ৫০ শতাংশ এবং উত্তোলন কাজে অন্তত ৯০ শতাংশ বাংলাদেশিকে যুক্ত করতে হবে। তেল-গ্যাস পাওয়া গেলে মোট গ্যাসের ৫৫ শতাংশ (কস্ট রিকভারি) পাবে ওএনজিসি। বাকি অংশের মধ্যে তেল ও কনডেনসেটের ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ এবং গ্যাসের ক্ষেত্রে ৬০ থেকে ৮৫ শতাংশ পাবে পেট্রোবাংলা। চুক্তি মেয়াদ আট বছর।
তিনি বলেন, ওএনসিজি এবং ওআইএল বাণিজ্যিক কার্যক্রমে গেলে সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) সরকারের পক্ষে মোট বিনিয়োগের ১০ শতাংশ বিনয়োগ করবে। আর তেল-গ্যাস উত্তোলন করা না হলে বাপেক্সকে কোনো খরচ দিতে হবে না।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, অগভীর সমুদ্রের ৪নং ব্লকের মোট আয়তন সাত হাজার ২৬৯ বর্গকিলোমিটার। এই ব্লকের ২২০০ কিলোমিটার লাইন দ্বিমাত্রিক জরিপ করা হবে। ইতোমধ্যে এই ব্লকের দ্বিমাত্রিক জরিপের জন্য ১০টি পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।
অপরদিকে ৯নং ব্লকের আয়তন সাত হাজার ২৬ বর্গকিলোমিটার। এই ব্লকের ২৮৫০ লাইন কিলোমিটার দ্বিমাত্রিক জরিপ করা হবে। এ জন্য ৭টি পয়েন্ট নির্ধারণ করেছে ওএনজিসি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠান ওএনজিসি উত্তোলিত গ্যাস প্রথমে পেট্রোবাংলার কাছে বিক্রির জন্য প্রস্তাব দিবে। পেট্রোবাংলা প্রত্যাখ্যান করলে দেশের মধ্যেই তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করতে হবে। উত্তোলিত তেল-গ্যাসের দাম হাই সালফার ফুয়েল অয়েল সিঙ্গাপুরের ভিত্তিতে প্রতি টন ১০০ থেকে ২০০ ডলারের মধ্যে নির্ধারিত হয়েছে।