শেভরনের তিন গ্যাস ক্ষেত্র কিনতে যাচ্ছে চীন!

শেভরন বাংলাদেশের তিনটি গ্যাস ক্ষেত্র কিনতে যাচ্ছে চীন। এবিষয়ে চীনের সরকারি প্রতিষ্ঠান জিনহুয়া ওয়েলের সাথে শেভরণের প্রাথমিক চুক্তি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেভরন বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক শেখ জাহিদুর রহমান জানান, বাংলাদেশে গ্যাসক্ষেত্রের ব্যাপারে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক আলোচনা হয়েছে। তবে চুক্তির বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজী হননি। একিইভাবে জিনহুয়া ওয়েল এর মুখপাত্র ঝ্যাং শিয়াওদি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, শেভরণের সম্পদ কেনার জন্য বাণিজ্যিক আলোচনা চলছে।
তবে চীনের সাথে শেভরণের চুক্তির বিষয়ে পেট্রোবাংলা কিছু জানে না বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ  শেভরণের সম্পদ কিনতে চাইলেও সে বিষয়ে  উদ্যোগের তেমন কোন অগ্রগতি নেই। শেভরনের গ্যাসক্ষেত্রগুলো কেনার বিষয়ে পেট্রোবাংলাই অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা।  শেভরণের সম্পদ কেনার জন্য পেট্রোবাংলা আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলোচনাও করেছে বলে জানা গেছে। এজন্য আন্তর্জাতিক জ্বালানি উপদেষ্টা উড ম্যাকেঞ্জিকে নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তারা শেভরনের সম্পদ মূল্য নিধারণ ও ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়গুলো দেখবে।
চীনের প্রতিরক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান নরিনকোর একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান জিনহুয়াঃ
গতবছর অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার কথা জানায় শেভরন। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ায় লোকসানে পড়ায় তারা বাংলাদেশসহ ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের সম্পদ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে মোট গ্যাসের অর্ধেকের বেশি শেভরণ উত্তোলন ও সরবরাহ করে। উৎপাদন অংশীদারিত্ব চুক্তি (পিএসসি) করে জালালাবাদ, মৌলভীবাজার ও বিবিয়ানা তিনটি গ্যাসক্ষেত্রে পরিচালনা করছে।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়,  শেভরণের গ্যাসের উৎপাদন গত দুই বছর কমেছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছর শেভরণ প্রায় চার হাজার ৬০০ কোটি টাকার গ্যাস পেট্রোবাংলাকে বিক্রি করেছে। যা ২০১৫-১৬ সালে এসে কমে হয়েছে চার হাজার কোটি টাকা। এই তিন গ্যাসক্ষেত্রে এক বছরের ব্যবধানে শেভরনের বিনিয়োগ কমেছে ১৯ শতাংশ। এ তিনক্ষেত্র ২০১৪ সালে শেভরণ খরচ করেছে ৪১ কোটি ২৯ লাখ ডলার। ২০১৫ সালে করেছে  ৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। অন্যদিকে ২০১৩ সালে খরচের পরিমান ছিল ৪৮ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। এ হিসাবে দুই বছরে বাংলাদেশে শেভরনের বিনিয়োগ কমেছে ২২ কোটি ৮৯ লাখ ডলার।
এদিকে বর্তমানে বাংলাদেশে শেভরনে দুই হাজার জনবল আছে। এরমধ্যে স্থায়ী, অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক জনবল আছে। গত একবছরে নতুন করে আর চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নবায়ন করেনি শেভরন। এছাড়া ঢাকাসহ গ্যাসক্ষেত্রের কার্যালয়গুলোতে খরচ কমানোর বিষয়ে নানা উদ্যোগ নিয়েছে তারা।