ঢাকার আকাশে নিচে নেমে এল মেঘ
বৈশাখী ঝড়-বাদলের মধ্যে কুয়াশার মতো মেঘের আনাগোনা অনেক কাছ থেকে দেখল ঢাকাবাসী।
একদিন আগের প্রবল বৃষ্টিতে রাজধানীর বাতাসে ভাসমান ধুলি অনেকটা নেমে এলেও রোববার বিকালে রাজধানীর আকাশে ধোঁয়াশা ভাব কৌতূহলী করে তোলে অনেককে।
এটি কুয়াশা, না মেঘ- তা জানতে আবহাওয়া অধিদপ্তরে যোগাযোগ করা হলে জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওটা মেঘই ছিল।
“বিকালে কুয়াশার মতো যা দেখা গেছে, তা মেঘ। জলীয়বাষ্প বেশি থাকায় ভারী অংশ নিচের দিকে এসেছিল। কালবৈশাখীর মৌসুমে মেঘের আকাশের নিচের দিকে আনাগোনা স্বাভাবিক।”
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষা মৌসুম শুরুর বাকি থাকলেও এবার অসময়ে ভারি বর্ষণ হচ্ছে, যা অনেক বছর পর দেখা গেল।
বিকালে মেঘের নিচে নেমে আসার মতো ঘটনার পর রাতে এক পশলা ভারি বর্ষণ হয়ে যায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক সমরেন্দ্র কর্মকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা রেয়ার কেস। অসময়ে এবনরমাল বৃষ্টি-এটাকে সুডো মুনসুন একটিভিটি বলে। প্রতি বছর এমন আবহাওয়া থাকে না, মাঝে মাঝে দেখা যায়।”
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক সমরেন্দ্র কর্মকার জানান, ২০০১ সালের পরই এবার মৌসুমের আগে ভারি বর্ষণ হতে দেখা যাচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ রহমান বলেন, রাজধানীসহ দেশের অনেক এলাকায় মাঝারী থেকে ভারি বর্ষণ হচ্ছে। মাঝবৈশাখে এমন বৃষ্টি ‘স্বাভাবিক’। দুয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টিও কমে আসবে।
এপ্রিলের শেষে এসে গত বছরের চেয়ে এবার তুলনামুলক বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বিলুপ্ত এসএমআরসি’র গবেষক ও বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মোহন কুমার দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এবার এ সময়ে অন্তত তিন কারণে বাংলাদেশে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ দেখা যাচ্ছে। আরব সাগরে পুবালি বায়ু প্রবাহের দুর্বলতা, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের বর্ধিতাংশের বিস্তার এবং সিলেটের পার্শ্ববর্তী এলাকায় ‘সাইক্লোনিক সার্কুলেশন’।
এসবের প্রভাবে আরও দু’দিন উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানান তিনি।
আবহাওয়াবিদ রহমান জানান, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এসময় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ছিল নোয়াখালীর মাইজদী কোর্টে ৯৮ মিলিমিটার।
সোমবারের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।
ঝড়ো হাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সেই সঙ্গে নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।