অর্থের অভাবে ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সংস্কার হচ্ছে না

ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৯৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৬টি ইউনিটের মধ্যে ৪টি ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উৎপাদন নেমে ১০ শতাংশে পৌঁছেছে। ফলে জাতীয় গ্রীডে প্রায় ৮৪০ মেগাওয়াট বিদুৎ কম সরবরাহ হচ্ছে। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ না পেয়ে নরসিংদীর উৎপাদনমুখি বিভিন্ন শিল্প কারখানাগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বিরূপ প্রভাব পড়ছে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুরসহ বেশ কিছু জেলায়।
ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ঘোড়াশালের ৬টি ইউনিটই মেয়াদ উত্তীর্ণ। বিষয়টি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে। তবে অর্থের অভাবে নুতন করে ইউনিট স্থাপন করা যাচ্ছে না।
সূত্র জানায়, নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে ২১০ একর জমির উপর অবস্থিত ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ১৯৭৪ সালে ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ইউনিট নিয়ে উৎপাদনের যাত্রা শুরু করে। পর্যায়ক্রমে ১৯৭৬, ১৯৮৬ ও ১৯৮৯ সালে একই স্থানে ৫৫ ও ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরো ৩টি ইউনিট চালু করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৪ ও ১৯৯৯ সালে ২১০ ক্ষমতা সম্পন্ন আরো দুটি ইউনিট চালু করা হয়। বর্তমানে ৯৫০ মেগাওয়াটের মধ্যে উৎপাদন হচ্ছে ৫৫ মেগাওয়াট করে দুইটি ইউনিট। উৎপাদন বন্ধ রয়েছে ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩, ৪, ৫, ৬ নম্বর ইউনিট। এরমধ্যে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই টারবাইন জেনারেটরে আগুন লেগে বন্ধ হয়ে যায় ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৬ নম্বর ইউনিট। প্রায় চার বছরেও এই ইউনিটটি চালু করা যায়নি। এছাড়া চলতি মাসে যান্ত্রিক ত্র“টি ও হাইড্রোজেন লিকেজের কারণে ৪ ও ৫ নম্বর ইউনিটের আইডি মোটরের ফ্যান ভেঙ্গে যাওয়ায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। গত দুই মাস আগে টারবাইন বেয়ারিং সমস্যার কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রের ৩ নম্বর ইউনিট।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ইউনিটগুলোর বেশিরভাগই মেয়াদ নেই। এরমধ্যে ইউনিটগুলোর লাইফ টাইম শেষ হয়ে গেছে। কারন হচ্ছে প্রতিটি ইউনিটই প্রায় ২৫/২৬ বছরের পুরানো। তাছাড়া ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণে যে পরিমাণ জনবল দরকার তার সংকট রয়েছে। তিনি বলেন,, প্রতি ৫ বছর অন্তর অন্তর বিদুৎ কেন্দ্রের ইউনিটগুলোকে সংস্কার করার নিয়ম থাকলেও প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব ও রাজনৈতিক নীতি নির্ধারকদের সদ্বিচ্ছার অভাবসহ নানা জটিলতার কারণে ওভারহোল্ডিং করা যাচ্ছে না। নিয়ম অনুযায়ী সংস্কার না করায় ইউনিটগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ কমে গেছে