৮ বছর পর চালু হচ্ছে আশুগঞ্জ ও এলেঙ্গা গ্যাস কম্প্রেসার
উদ্যোগ নেয়ার আট বছর পর চালু হতে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় স্থাপিত দুই গ্যাস কম্প্রেসার। প্রাথমিকভাবে কম্প্রেসার স্থাপন করতে ব্যয় ৩০৪ কোটি টাকা ধরা হলেও অর্থায়ন ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় নির্র্ধারিত সময়ে চালু করতে না পারায় ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ৪৯৪ কোটি টাকায়।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই আশুগঞ্জ এবং এপ্রিলের শেষে এলেঙ্গার কম্প্রেসার দুটি চালু হবে বলে আশা করছে পেট্রোবাংলা। গ্যাস কম্প্রেসার দু’টির কারণে চট্টগ্রাম, ঢাকা. আশুগঞ্জ, মনোহরদি, জয়দেবপুর, নরসিংদী, টাঙ্গাইল, কালিয়াকৈর, চন্দ্রা ও সাভারসহ এর আশেপাশের এলাকায় গ্যাসের চাপ বৃদ্ধি পাবে।
আশুগঞ্জের কম্প্রেসারটি এরইমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। এলেঙ্গারটি চলতি মাসের মধ্যেই চালু হবে। দুইটি কম্প্রেসার চলতি মাসেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করতে পারেন।
গ্যাসের চাপ বৃদ্ধি করতে ২০০৬ সালে কম্প্রেসার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। ওই সময় থেকেই কম্প্রেসার স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল)। কিন্তু অর্থায়ন ও দরপত্রের জটিলতার কারণে কাজ এগুচ্ছিল না। পরে ২০১১ সালের ২১ অক্টোবর কোরিয়ার হুন্দাই ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল) জিটিসিএল জানায়, গতবছরের আগষ্ট মাসে কম্প্রেসার স্টেশন দুটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কাজ শেষ করতে না পারায় গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু ডিসেম্বরের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিদেশি প্রকৌশলীরা কাজ করতে পারেনি। এ কারণে কম্প্রেসার দুটি চালু করতে চার মাস অতিরিক্ত সময় লেগেছে।
সরকার এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) যৌথভাবে প্রকল্পটিতে বিনিয়োগ করেছে। চলতি বছর ২২ জানুয়ারি কম্প্রেসার স্টেশন স্থাপনের প্রকল্প অনুমোদন করে একনেক।
পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর মানবকণ্ঠকে জানান, আশুগঞ্জের কম্প্রেসারটির কারণে চট্টগ্রামে গ্যাসের সরবরাহ বাড়বে। আশুগঞ্জের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোসহ এর আশে পাশের সব স্থাপনাতেই গ্যাসের চাপ বাড়বে। একই সঙ্গে দুই কম্প্রেসার চালু হলে ঢাকা, সাভারসহ এর আশেপাশের এলাকায় গ্যাসের চাপ বৃদ্ধি পাবে। এতে আবাসিক গ্রাহকসহ শিল্প গ্রাহকরাও সুবিধা পাবে। তিনি জানান, আশুগঞ্জের কম্প্রেসার স্টেশনটির টেস্টিং শুরু হয়েছে। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে টেস্টিং শেষে পুরোদমে কম্প্রেসারটি চালু করা সম্ভব হবে। এরপর এলেঙ্গার কম্প্রেসারটির টেস্টিং শুরু করা হবে। এ জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। এখন প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিলেই কম্প্রেসারটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।
জিটিসিএল জানায়, বর্তমানে আশুগঞ্জ পয়েন্টে গ্যাসের চাপ থাকে ৭০০ পিএসআই (প্রতি বর্গইঞ্চিতে চাপের পরিমাণ)। কম্প্রেসর স্থাপনের পর যা এক হাজার পিএসআই’য়ে দাঁড়াবে। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় বর্তমান চাপ ৪৫০ থেকে ৫৫০ পিএসআই। এটাও বেড়ে এক হাজার পিএসআই হবে।
এর আগে মৌলভিবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মাঝামাঝি মুচাইতে একটি কম্প্রেসর স্থাপন করে আন্তর্জাতিক তেল গ্যাস কোম্পানি শেভরন।