আদানির চুক্তি পুনর্মূল্যায়নে কমিটি গঠন ও নথি দাখিলের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক/ বিডিনিউজ, ঢাকা (মঙ্গলবার, ১৯শে নভেম্বর ২০২৪):
ভারতের আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তি পুনর্মূল্যায়নে উচ্চ পর্যায়ের অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
একইসঙ্গে এ চুক্তি স্বাক্ষরের আগে যে দর কষাকষি হয়েছিল, তার নথি দাখিলের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া এই চুক্তি পুনর্বিবেচনা বা বাতিল করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে ভারতের আদানি গ্রুপের একটি বিদ্যুৎ ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছিল ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয়ের জন্য। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ মহল, নাগরিক সমাজ ও দুর্নীতিবিরোধী বিভিন্ন সংগঠন থেকে সমালোচনা করে বলা হয়েছে – এটি একপক্ষীয়, বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী এবং আমাদের জননীতি পরিপন্থি। সরকারকে নোটিস দিয়েছিলাম ওই অসম, অন্যায্য চুক্তিটা যেন পুনর্বিবেচনা বা বাতিল করে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় রিট করা হয়েছে।
আব্দুল কাইয়ুম বলেন, শুনানি শেষে এ চুক্তি পুনর্বিবেচনা বা বাতিল করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে আদালত। একইসঙ্গে তিনটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো – চুক্তিটি স্বাক্ষরের আগে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে যে দরকষাকষি হয়েছিল এ সংক্রান্ত সব ‘মিনিটস’ আগামী এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে হবে। চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করতে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করতে হবে, যেখানে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইন বিশেষজ্ঞ থাকবেন, যারা এ চুক্তিতে দেশের স্বার্থবিরোধী কী আছে তা বিশ্লেষণ করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন। এ ছাড়া রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একটি কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়- যারা এ চুক্তির যে প্রক্রিয়া আছে তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবেন।
২০১৭ সালের ৫ই নভেম্বর বিদ্যুৎ বিভাগ ও আদানি পাওয়ার এর মধ্যে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি হয়। আদানি পাওয়ার আদানি গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান।
চুক্তির আওতায় বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিতে ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে আদানি পাওয়ার।
আদানির বিদ্যুৎ দেশে এনে জাতীয় গ্রিডে যোগ করতে বিশেষ সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ অংশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বগুড়ায় দুটি সাবস্টেশন ও অন্যান্য সঞ্চালন স্থাপনা নির্মাণ করেছে বিদ্যুৎ সঞ্চালন কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ-পিজিসিবি।
গত বছরের ৯ই মার্চ সন্ধ্যা ৭টা ৩৮ মিনিটে ঝাড়খণ্ডের গড্ডা থেকে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন শুরু হয়।