আবার মেঘালয় থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ
চার মাস বন্ধ থাকার পর গত ২২ মে থেকে চালু হয়েছিল ভারতের মেঘালয় থেকে কয়লা আমদানি। কিন্তু দেশটির সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ১০ দিনের মাথায় তা ফের বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারক ও শ্রমিকরা।
গত ১৭ মে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট দেশটির কয়লা রফতানির ওপর একটি আদেশ দেন। এতে শুধু উত্তোলিত কয়লা ৩১ মে পর্যন্ত রফতানির অনুমতি দেয়া হয়। এ আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ মে থেকে সুনামগঞ্জের বড়ছড়া ও বাগলী সীমান্ত দিয়ে কয়লা আমদানি শুরু করেন বাংলাদেশের আমদানিকারকরা, যা ৩১ মে ফের বন্ধ হয়ে গেছে।
আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, এ সময়ে মাত্র ১০ হাজার টনের মতো কয়লা আমদানি হয়েছে। যদিও এখনো ভারতের ব্যাংকে লেটার অব ক্রেডিটের (এলসি) প্রায় ১৫০ কোটি টাকা আটকে আছে তাদের।
সিলেট কয়লা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি চন্দন সাহা বলেন, ভারতীয় উচ্চ আদালতের আদেশের পর ১০ দিন সুনামগঞ্জের দুটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি হয়েছে। তবে এ সময় তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে কয়লা আমদানি করা যায়নি। পুনরায় এসব শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা রফতানি শুরুর জন্য ভারতীয় রফতানিকারকরা আবার উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। আগামী ২ জুলাই এ আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
সিলেট কয়লা আমদানিকারক সমিতি সূত্রে জানা যায়, মেঘালয় থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ থাকলেও ভারতের আসাম থেকে সিলেটের বিয়ানীবাজারের সুতারকান্দি শুল্ক স্টেশনে কয়লা আমদানি অব্যাহত রয়েছে। গত শনিবারও এ শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি হয়েছে।
এর আগে প্রায় সাত মাস পর গত ডিসেম্বরে চালু হয়েছিল সিলেটের সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে কয়লা আমদানি। কিন্তু শুরুর ২৫ দিনের মাথায় হঠাৎ করেই তা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় চার মাস বন্ধ থাকার পর সেবার মাত্র ১৪ দিনের জন্য কয়লা আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছিল।
এদিকে ঈদের আগ মুহূর্তে কয়লা আমদানি বন্ধে ব্যবসায়িক লোকসানের মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা। বেকার হয়ে পড়েছেন বিভিন্ন সীমান্তে কয়লা বোঝাইয়ের কাজে নিয়োজিত প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক।
দেশের চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশই পূরণ করে ভারত থেকে আসা কয়লা। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বিভিন্ন খনি থেকে প্রতিদিন সিলেট বিভাগের তামাবিল, বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলী সীমান্ত দিয়ে প্রায় ১০ হাজার টন কয়লা আমদানি হতো।
মেঘালয়ের একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশগত ক্ষতির কথা বিবেচনায় নিয়ে ২০১৪ সালে কয়লা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ভারতের ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। এরপর সে দেশের রফতানিকারকরা এর বিরুদ্ধে আবেদন করলে কয়েক দফায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য উত্তোলিত কয়লা রফতানির সুযোগ দেন দেশটির উচ্চ আদালত।
এরপর ২০১৮ সালের ১ জুন থেকে ফের বন্ধ হয়ে যায় কয়লা আমদানি। পরবর্তী সময়ে ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর ভারতীয় আদালত মেঘালয়ের বিভিন্ন খনিতে উত্তোলনকৃত কয়লা চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রফতানির অনুমতি দেন। আদালতের অনুমতির পর বাংলাদেশের আমদানিকারকরা এলসি করে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর থেকে আমদানি শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ করে গত ১৫ জানুয়ারি থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন ভারতের উচ্চ আদালত।
–
বণিকবার্তা থেকে