আবার লোডশেডিংয়ের যুগে
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাশ্রয়ী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশজুড়ে পরিকল্পিত যে লোডশেডিং তা কোথাও কোথাও সাতঘণ্টায় ঠেকেছে। একঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কথা বলা হলেও দেশের উত্তরাঞ্চলের অনেক স্থানে টানা সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকার খবর পাওয়া গেছে। রাজশাহী, রংপুরসহ বিভিন্নএলাকায় এই অবস্থা। ঢাকার বাইরে লোডশেডিং সূচি বলে কিছু নেই। যখন খুশি তখন বিদ্যুৎ যাচ্ছে আসছে।
লোডশেডিংয়ে প্রচ- গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শিল্পে লোডশেডিং না করার কথা বলা হলেও আলাদা কওে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা পুরোপুরি না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে যখন যে এলাকায় বিদ্যুৎ থাকছে না তখন শিল্প আবাসিক বাণিজ্যিক সকলের বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে কলকারখানার উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও লোডশেডিংয়ে পাঠদানে বিঘœ ঘটছে। আধাঘণ্টা-একঘণ্টা পরপরই বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার কারণে ইলেক্ট্রিক যন্ত্র নষ্ট হওয়া শুরু হয়েছে।
দেশের ছয়টি বিতরণ কোম্পানির মধ্যে তিনটি কোম্পানি লোডশেডিংয়ের সূচি প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) এখনও কোনো সূচির কথা জানায়নি। সূচি প্রকাশ করেনি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ওজোপাডিকো।
এলাকাভিত্তিক সূচি প্রকাশ করে একঘণ্টা লোডশেডিং করার প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকার বিতরণকারী কোম্পানি ডিপিডিসি ও ডেসকো। তবে তা পুরোপুরি পালন করা হচ্ছেনা।
ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান বলেন, সূচি অনুসরণ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তবে সরবরাহ কম হওয়ায় তা পুরোপুরি মানা যাচ্ছে না। ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কাওসার আমীর আলী বলেন, সন্ধ্যার পর দিনের থেকে ঘাটতি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। ফলে অনেক এলাকায় লোডশেডিংয়ের শিডিউল মানা সম্ভব হয়নি।
সারাদেশে সন্ধ্যায় বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে সাড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াট, সর্বোচ্চ উৎপাদন হচ্ছে ১২ হাজার মেগাওয়াট। ঘাটতি থাকছে আড়াই হাজার মেগাওয়াট।
রাজধানীতে ডেসকো এলাকায় দিনে ৮০ মেগাওয়াট লোডশেডিং থাকলেও, সন্ধ্যায় তা বেড়ে হয় ১৫০ মেগাওয়াট। ডিপিডিসি এলাকায়ও সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ ঘাটতি ২০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে ২০০ থেকে ২২০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে সকল জ্বালানির দাম মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে। বিশ্বের সাথে বাংলাদেশেও এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। জ্বালানি তেল আমদানিতে সরকারের ভর্তুকি বেড়েছে। ডিজেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে।
খোলাবাজার থেকে কেনা হচ্ছে না এলএনজি। এতে কমেছে গ্যাস সরবরাহ। গ্যাস সংকটে কমেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। পরিস্থিতি সামলাতে ঘোষণা দিয়ে লোডশেডিং করা হচ্ছে।