আলোকসজ্জা না করার নির্দেশ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের

সেপ্টেম্বরের আগে কাটছে না লোডশেডিং

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সারা দেশে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশনা জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি পণ্যের বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
বৃহষ্পতিবার দেয়া নির্দেশনায় বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত সারা দেশে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার, শপিং মল, দোকানপাট, অফিস ও বাসাবাড়িতে আলোকসজ্জা না করার জন্য অনুরোধ করা হল।
বিষয়টি বাস্তবায়নে সকল জেলা প্রশাসকদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এরআগে সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গ্যাস ও বিদ্যুতের বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম সাংবাদিকদের বলেন, দেশে বিদ্যুৎ নিয়ে এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে নিয়ন্ত্রিত লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুতের চাহিদা কমাতে হবে। সকলকে মিতব্যয়ী ও সাশ্রয়ী হতে হবে।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এসির ব্যবহার ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা এবং ব্যবহার কম করলে হয়তো লোডশেডিং অনেক কম হবে। মসজিদে এসির ব্যবহার কমাতে হবে। বিয়েসহ সব অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে শেষ করতে হবে। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। তখন বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসবে।
তিনি বলেন, এখন চাহিদা আছে সাড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াট। সাশ্রয়ী হলে চাহিদা সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াটে নামিয়ে আনা যাবে। বর্তমানে দোকানপাটগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বন্ধ করার পাশাপাশি অফিসের সময় কমিয়ে আনা যায় কিনা তা-ও চিন্তা করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিদিন অফিসে না গিয়ে বাসায় বসে কাজের কথাও ভাবা হচ্ছে।
আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুতের বর্তমান পরিস্থিতি বহাল থাকতে পারে বলে তিনি জানান।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি একটা যুদ্ধের মতো। এ যুদ্ধ মোকাবেলায় সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। সবাই মিলে যদি চেষ্টা করি, তাহলে পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারব। আগামী সেপ্টেম্বরের দিকে ভারত থেকে আদানির বিদ্যুৎ আসবে। রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আসবে। পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এছাড়া চট্টগ্রামের এস আলমের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আসবে। ফলে তখন পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, জাপান, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোয়ও লোডশেডিং হচ্ছে। তারাও সাশ্রয়ে মনোযোগী হচ্ছে। তাদের তুলনায় আমরা অনেক ভালো আছি। তবে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। জাপানের আয় আমাদের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি। সেখানেও লোডশেডিং হচ্ছে। তাদের নাগরিকদের সতর্ক করে দেয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ জ্বালানি সাশ্রয়ের ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।

উপদেষ্টা বলেন, লোডশেডিংয়ের বিষয়টি কীভাবে আগে জানানো যায়, সেটি নিয়ে আলোচনা করেছি। আগেই যদি লোডশেডিংয়ের ব্যাপারে জানাতে পারি, তাহলে গ্রাহকরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারবে। এ নিয়ে ডিপিডিসি একটা অ্যাপ তৈরি করেছে। এ অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকরা জানতে পারবে, কখন কোথায় লোডশেডিং থাকবে। সেটি নিয়ে সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই জানানো হবে। মাঠ পর্যায়ে যারা আছেন, তারা এটি বাস্তবায়ন করবেন। প্রয়োজনে তাদের আরও শক্তিশালী করা হবে, যাতে আমরা ঘাটতিটা কাটিয়ে উঠতে পারি।