আশুগঞ্জে কনডেন্স লাইনে ছিদ্র
বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড থেকে আশুগঞ্জ পেট্রোবাংলা পর্যন্ত উত্তর-দক্ষিন ৬ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের কনডেন্স লাইন ছিদ্র হয়ে গেছে। এতে বিবিয়ানা থেকে আশুগঞ্জে তেল সরবরাহ বন্ধ আছে।
সোমবার দুপুরে আশুগঞ্জের আলমনগর-চরচারতলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। জিটিসিএল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছে, কয়েক ব্যারেল তেল নষ্ট হয়েছে। ইতিমধ্যে পাইপ দিয়ে তেল বের হওয়া বন্ধ রয়েছে।
এদিকে পাইপ থেকে বের হওয়া তেল স্থানীয় লোকজন বিভিন্ন ভাবে সংগ্রহ করছে। এতে কয়েক বিঘা জমির ইরি ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এব্যাপারে জিটিসিএল আশুগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুল মোমেন জানান, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, পাইপ লাইনের পুরাতন মেরামত স্থানে ছিদ্র হয়ে থাকতে পারে। বর্তমানে তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। মেরামত কাজ চলছে।
জানা গেছে, বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড থেকে গ্যাসের উপজাত হিসেবে পাওয়া কনডেন্স তেল (ডিজেল জাতীয় তেল ) একটি ছয় ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ লাইন দিয়ে আশুগঞ্জে জিটিসিএল এ আসে। সেখান থেকে এ তেল বিভিন্ন ডিপোতে পাঠানো হয়।
সোমবার সকাল থেকে আশুগঞ্জের আলমনগর-চরচারতলা এলাকায় ইরি ধানের ক্ষেতে কেরোসিন তেল বের হয়ে ভাসতে থাকে। প্রথম দিকে তেল বের হওয়ার পরিমান কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে তা বাড়তে থাকে। বিকালে পুরু জমি তেলে ভরে যায়। চারপাশে গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। বিকাল ৪টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সী স্থানীয় নারী-পুরুষ, ছেলে-মেয়ে কলসী, বোতল বালতিসহ বিভিন্ন পাত্র দিয়ে তেল সংগ্রহ করছে। চাতাল শ্রমিকসহ দরিদ্র শ্রেণির লোকজনের কাছ থেকে কম মুল্যে তেল কিনতে অনেক মোটর সাইকেল আরোহীকেও দেখা গেছে।
জিটিসিএল কর্তৃপক্ষ জানায়, পাইপ লাইনের এ অংশে একটি জযেন্ট নষ্ট হওয়ায় প্রায় সাড়ে সাত বছর আগে তা মেরামত করা হয়েছিল। তারা ধারনা করছে, এ জয়েন্টে আবার লিকেজ হয়ে থাকতে পারে। বর্তমানে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং সমস্যা নির্ধারণ ও তা মেরামতের প্রক্রিয়া চলছে। তারা আরও জানায়, লিকেজের কারনে আনুমানিক ৩/৪ ব্যারেল তেল নষ্ট হয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবী আরও বেশি তেল নষ্ট হয়েছে। এদিকে তেলের প্রভাবে ও শত শত লোকজন তেল সংগ্রহ করতে এসে অন্তত ৫/৬ বিঘা জমির ধান ক্ষেত নষ্ট হয়েছে।
তেল সংগ্রহ করতে আসা কমলা বেগম, প্রিয়া, রাফিন শাহ আলমসহ কয়েকজন জানান, বিকাল থেকে শত শত লোক তেল নিচ্ছে। তারাও প্রত্যেকে ২ (১৫ লিটারের) কলস করে তেল সংগ্রহ করছে। তেল সংগ্রহ দেখতে আসা মুরাদ মিয়া জানান, যেভাবে লোকজন তেল নিয়েছে তাতে মনে হয় কমপক্ষে ২০/৩০ লক্ষ টাকার তেল নষ্ট হয়েছে।