এবার ঋতুর পরিবর্তন হয়েছে নানা দুর্যোগের মধ্যেই

বদলে যাওয়া আবহাওয়ায় বাংলাদেশে এবার ঋতুর পরিবর্তন হয়েছে নানা দুর্যোগের মধ্যেই।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। মাসজুড়েই দেশের বিভিন্ন এলাকাভেদে বৃষ্টির ক্ষেত্রে ব্যাপক অসঙ্গতি ও বৈপরীত্য ছিল। সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রামে স্বাভাবিকের চেয়ে ৭১ দশমিক ২ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি, ময়মনসিংহে ৪৮ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি, সিলেটে ২৪ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়। অন্যদিকে উত্তরাঞ্চলে এমনকি দক্ষিণাঞ্চলেও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টি হয়েছে। গত মাসে রাজশাহী বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ কম, রংপুর বিভাগে ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ কম, খুলনা বিভাগে ২৭ দশমিক ৮ শতাংশ কম এবং বরিশালে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ কম পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে।

একের পর এক দুর্যোগের ঘনঘটায় চরম জনদুর্ভোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল, ভূটান, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, মিয়ানমার, চীন পর্যন্ত অস্বাভাবিক বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়েছে। দেশে বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব শুরু গত মার্চ মাসে। প্রথমে বন্যা, এরপর ভূমিধস-পাহাড়ধস, এরপর ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী ও বজ্রপাতের আধিক্য, দেশজুড়ে দাবদাহ, অতিবৃষ্টি বিরূপ প্রভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তবে চলতি বছরের শুরুতে শীতের প্রভাব ছিল ঠিক উল্টো। শীত ছিল প্রকোপহীন ও সংক্ষিপ্ত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আবহাওয়ার ‘এল-নিনো’ অবস্থা (বৃষ্টি রোধকারী) কমে গিয়ে লা নিনোর প্রভাবে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, চীনে বর্ষারোহী মৌসুমি বায়ু সক্রিয় ও জোরদার ছিল। বাংলাদেশ ও ভারতে এবার মৌসুমি বায়ুর আগমনও ঘটে বেশ আগেভাগেই। সবমিলিয়েই চলতি বছর বাংলাদেশের ওপর দিয়ে অনেকগুলো দুর্যোগ গেছে। আগামী তিনমাসও এই ধরনের বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করবে বলে আশংকা বিশেষজ্ঞদের। তাই দুর্যোগ মোকাবিলায় আগে থেকে বাংলাদেশকে তৈরি হতে হবে। তৈরি হতে হবে দুর্যোগের আগে, দুর্যোগের সময়ে এবং দুর্যোগের পরের সময়গুলো যথাযথভাবে মোকাবিলা করার।