কাতার ইস্যুতে সংকটের মুখে জ্বালানি তেলের বাজার
কাতারের সঙ্গে সাতটি মুসলিম দেশের সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণায় সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকট জ্বালানি তেলের বাজারের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। এর ফলে শীর্ষ তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের উত্তোলন হ্রাস চুক্তিটি হুমকির মুখে পড়বে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
সোমবার (৫ জুন) কাতারের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। পরে এ তালিকায় যুক্ত হয় মিসর, বাহরাইন, লিবিয়া, ইয়েমেন, মালদ্বীপ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। কাতারের বিরুদ্ধে জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদ এবং ইরানকে সমর্থনের অভিযোগ আনা হয়।
এর আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজাইরাহ ডক থেকে কাতার অভিমুখে যাওয়া কিংবা দেশটি থেকে আসা জাহাজে কাতারের তেল কিংবা এলএনজি গ্যাসের পরিবর্তে বিকল্প জ্বালানি নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, চলমান বিরোধ ও উত্তেজনা একই ইস্যুতে ২০১৪ সালের বিরোধকে ছাপিয়ে যাবে।
রাজনৈতিক ঝুঁকি বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইউরেশিয়া গ্রুপ জানায়, কাতার বিরোধী জোটের এ উদ্যোগ স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে তারা দেশটির বিদ্যমান নীতির বদল চায়। অথবা দোহায় নেতৃত্বের বদল ঘটাতে চায়। সৌদি আরব ও এর মিত্র দেশগুলো অন্য কোনো সমাধান মানবে না।
কাতার দৈনিক ৬ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করে। উত্তোলনের হিসাবে ওপেকভুক্ত দেশগুলোর তালিকায় কাতারের অবস্থান শেষের দিকে। তবুও সংগঠনের উত্তোলন কমানোর চুক্তির ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
অ্যাক্সিট্রেডারের প্রধান বাজার কৌশলবিদ গ্রেগ ম্যাককেননার মতে, কাতারকে বয়কট করার মাধ্যমে ওপেকের উত্তোলন হ্রাস সংক্রান্ত ঐক্য হুমকির মুখে পড়ার প্রকৃত সম্ভাবনা রয়েছে। বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কাতার পণ্যটির উত্তোলন আরো বাড়াতে পারে। আর কাতারকে দেখে ওপেকভুক্ত অন্যান্য দেশ উত্তোলন বাড়াতে উদ্বুদ্ধ হলে বিষয়টি জ্বালানি তেলের বাজারের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেবে।
তবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক কোম্পানি স্ট্রং পেট্রোলিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়েস্টেইন বেরেন্টসেন মনে করেন, কাতারের মতো কম উত্তোলনকারী একটি দেশের প্রভাবে সরবরাহ কিংবা ওপেকের চুক্তিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না।