কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক, জ্বালানি সহায়তা বাড়ানোর আশ্বাস

ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতার মধ্যে কাতারের কাছ থেকে জ্বালানি সহায়তা বাড়ানোর আশ্বাস মিলেছে।

রোববার দোহায় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে এ আশ্বাস মেলে বলে বাসস জানিয়েছ।

স্বল্পোন্নত দেশগুলো নিয়ে পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলন হচ্ছে দোহায়। ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) এই সম্মেলন উদ্বোধনে অংশ নেওয়ার পর সেখানেই কাতারের আমিরের সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক হয়।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, কাতারের আমির বলেছেন, তিনি শেখ হাসিনাকে সাহায্য করতে চান। কাতার সব সময় বাংলাদেশকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় কাতারের কাছ থেকে বার্ষিক আরও এক মিলিয়ন মেট্রিক টন (এমটিএ) এলএনজি চান।

“প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, আমরা কাতারের সাহায্য চাই। ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ জ্বালানি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আমি চুক্তি নবায়ন করতে চাই। আমি আরও এলএনজি চাই।”

জবাবে কাতারের আমির বাংলাদেশের চাহিদা জানতে চেয়েছিলেন।

মোমেন বলেন, “তাকে বলা হয়, বাংলাদেশ আরেকটি এমটিএ অর্থাৎ ১৬-১৭ কনটেইনার জ্বালানি চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে আমির বলেন, আপনার কাতার ছাড়ার আগে তার জ্বালানি মন্ত্রী এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে আলোচনা করবেন।”

বাংলাদেশ বর্তমানে প্রায় ৪০টি কন্টেইনার জ্বালানি আমদানি করছে, যার পরিমাণ ১.৮-২.৫ এমটিএ।

শেখ হাসিনা কাতারের আমিরকে বাংলাদেশ সফরে আসার আমন্ত্রণ জানালে তিনি এই বছরই বাংলাদেশে আসার প্রতিশ্রুতি দেন বলে মোমেন জানান।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কথা তুলে ধরে সেখানে কাতারের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন।

কাতারে বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিষয়ে নজর রাখতে কাতারের আমিরকে অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।

কিউএনসিসির দ্বিপাক্ষিক সভাকক্ষে ইউএনডিপি প্রশাসক আখিম স্টেইনারের সঙ্গেও বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।

এলডিসি থেকে উত্তরণের পর্বে দেশগুলো যাতে এলডিসির আন্তর্জাতিক সুবিধাগুলো একেবারে না হারায়, সেদিকে নজর রাখতে তার প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “স্বল্পোন্নত দেশ থেকে যারা স্নাতক হচ্ছে তাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার করে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। ইউএনডিপির কিছু প্রক্রিয়াকরণ করা উচিৎ, যাতে দেশগুলোকে একবারে সমস্ত সুবিধা হারাতে না হয়।”

ইউএনডিপি প্রশাসক বাংলাদেশের উন্নয়ন, বিশেষ করে গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন এবং গ্রামীণ এলাকায় নগর সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ডিজিটালাইজেশনের প্রশংসা করেন বলে বাসস জানিয়েছে।

কিউএনসিসিতে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) মহাসচিব ডোরেন বোগদান-মার্টিনের সঙ্গেও বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। তিনি সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তিগত সহায়তা তান আইটিইউর কাছে।

এদিন বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক জাতিসংঘ সম্মেলনের মহাসচিব রেবেকা গ্রিনস্প্যান কিউএনসিসিতে পৃথকভাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্য আনতে এবং দেশের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে আঙ্কটাডের সহায়তা কামনা করেন।

শেখ হাসিনা কিউএসিসির প্রদর্শনী হলে মধ্যাহ্ন ভোজেও অংশ নেন।