আজ ফুলবাড়ী দিবস
আজ ফুলবাড়ী দিবস। ফুলবাড়ীর গণঅভ্যুত্থানের নবম বার্ষিকী। ২০০৬ সালের এই দিনে ফুলবাড়ীসহ ছয় থানার বাঙালি আদিবাসী নারী-পুরুষ শিশু বৃদ্ধসহ বহু মানুষ কয়লা ক্ষেত্র উম্মুক্ত পদ্ধতিতে খনন এবং ফুলবাড়ী কয়লা প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সমাবেশ করছিল। সমাবেশে সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালায় বিডিআর। এতে আমিনুল, সালেকিন ও তরিকুল মারা যান। গুলিবিদ্ধ হন ২০ জন, আহত হন দুই শতাধিক।
এরপর সারাদেশের মানুষের প্রতিবাদের মুখে ৩০ আগষ্ট চারদলীয় জোট সরকার ‘ফুলবাড়ী চুক্তি’ সাক্ষর করতে বাধ্য হয়। ২০০৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফুলবাড়ীতে এক জনসভায় ফুলবাড়ী চুক্তির প্রতি পূর্ণ সংহতি জানিয়ে ক্ষমতায় গেলে তা পূর্ণ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি।
সমাবেশে হামলার দিনটিকে স্মরণ করে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ‘জাতীয় সম্পদ রক্ষা দিবস’ এবং ফুলবাড়ীবাসীর পাশে থেকে ‘ফুলবাড়ী শোক দিবস’ পালন উপলক্ষে মঙ্গলবার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
এ বিষয়ে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুলাহ এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এক বিবৃতিতে বলেন, চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিএনপি এবং প্রকাশ্য অঙ্গীকারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এই চুক্তি বাস্তবায়নে দায়বদ্ধ। ফুলবাড়ী চুক্তি বাস্তবায়ন এখন তাই রাষ্ট্রের দায়। এর অন্যথা করার কোনো পথ নাই। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের দুই মেয়াদে ছয় বছর পার হলেও এখনও সেই চুক্তির মূলধারাগুলোর বাস্তবায়ন হয়নি। কোন বৈধ অনুমোদন না পেলেও ফুলবাড়ীর কয়লা খনির ওপর লন্ডনে এখনও বেআইনীভাবে শেয়ার ব্যবসা করছে এশিয়া এনার্জি (জিসিএম)।
দিবসটি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করা হবে ফুলবাড়ীতে। ফুলবাড়ি শহীদ স্তম্ভে সকাল সাতটায় শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এছাড়া কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারন, গণজমায়েত, শোক র্যালী, স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ অর্পণ ও শহীদ স্মরলে দোয়া, রান্না করা খাবার বিতরণ করা হবে। ঢাকায় সাড়ে নয়টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ, পরে আলোচনা সভা র্যালী ও প্রতিরোধের গানসহ নানা আয়োজন থাকবে। এছাড়া সারাদেশের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলীর মাধমে দিবসটি পালন করা হবে।