গাজার চিড়িয়াখানা এখন ধ্বংসস্তুপ
বিসান বিনোদন উদ্যান। উত্তর গাজার সব চেয়ে বড় চিড়িয়াখানা। আট থেকে আশি, সকলের সব চেয়ে প্রিয়। বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন আসা মানেই দল বেঁধে শপিং মল কিংবা মাল্টিপ্লেক্স নয়, গন্তব্য ওই চিড়িয়াখানা। সোহাগের ডাকনাম ‘সবুজ স্বর্গ’-ও ওদেরই দেওয়া। ২০০৮ সালে হামাস সরকার ‘ভিলেজ ট্যুরিজম’ প্রকল্পের অংশ হিসেবেই এই উদ্যানটি তৈরি করেছিল। এখন অবশ্য স্বর্গে শুধুই শ্মশানের স্তব্ধতা। ইসরাইলি হামলায় কোনও রকমে রয়ে গিয়েছে মূল ফটকখানি, যাতে বড় বড় করে লেখা শুধু উদ্যানের নাম। বাকি সব ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন। বেশির ভাগটাই ছাই হয়ে মিশে গিয়েছে মাটিতে। নিহত পশু-পাখির রক্তও শুকিয়ে গাঢ় খয়েরি।
ইসরাইলের এফ-১৬ ফাইটার জেট থেকে অন্তত আটটি ক্ষেপণাস্ত্র এখানে ছোড়া হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। কুমীর, সিংহ, উটপাখি, বাঁদর মিলিয়ে ১০০টিরও বেশি প্রাণি ছিল এই চিড়িয়াখানায়। এখন বেঁচে মাত্র ১০টি। তবে বেশির ভাগই হয় অসুস্থ-আহত, না হয় ধুঁকছে না খেতে পেয়ে। কোনো মতে রক্ষা পেয়েছে তিনটে সিংহও। আয়ত্তের মধ্যেই পড়ে রয়েছে একটা মরা ময়ূর। ক্ষুধার্ত তিনটি সিংহই, তবু যেন খাবারে অরুচি। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, যারা বেঁচে আছে, আসলে প্রত্যেকেই ভয়ে সিঁটিয়ে। খাঁচা থেকে বেরোতেই চাইছে না কেউ। অপরিচ্ছন্ন জায়গায় দিনের পর দিন থাকতে থাকতেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে সব। অর্থের অভাবে মিলছে না চিকিৎসা, জুটছে না খাবারও।