গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যায় ভুগছে পোশাকশিল্প
পোশাক কারখানায় নতুন গ্যাস-সংযোগ, পুরোনো লাইন স্থানান্তর ও লোড বাড়ানো হচ্ছে না। গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের চাপ কম থাকায় কারখানার যন্ত্রপাতি ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এ ছাড়া আশুলিয়া, গাজীপুর, কোনাবাড়ী, সাভার, রূপগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় দিনে পাঁচ-সাত ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। আবার বিদ্যুতের নতুন সংযোগ ও লাইন স্থানান্তরে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হন।
তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর শীর্ষস্থানীয় নেতারা শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন। এতে তাঁরা তৈরি পোশাকশিল্পের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এ সময় নেতারা পোশাক খাতে গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি ওয়ানস্টপ সেল গঠন করার ওপর জোর দেন।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএর কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি ফারুক হাসান, এস এম মান্নান, মোহাম্মদ নাছির, মাহমুদ হাসান খান ও ফেরদৌস পারভেজ এবং পরিচালক এ এন এম সাইফুদ্দিন, মিরান আলী ও আশিকুর রহমান।
বক্তব্যের শুরুতেই বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে পোশাকশিল্পকে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পোশাকপণ্যগুলোর মূল্য ৪০ শতাংশ কমেছে। আর প্রতিবছর ৮ থেকে ১০ শতাংশ হারে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। গত চার বছরে ডলারের বিপরীতে স্থানীয় টাকার বিনিময় হার ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়েছে। টাকার এই অতিমূল্যায়ন ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির ফলে প্রচ্ছন্নভাবে পোশাক কারখানার প্রকৃত আয় কমছে।
এরপর স্থানীয় পর্যায়ের সমস্যা প্রসঙ্গে গ্যাস-বিদ্যুতের কথা বলেন বিজিএমইএর সভাপতি। তিনি পোশাকশিল্পের ৬৩ কারখানার গ্যাসের সংযোগ স্থানান্তর, ৭৩ কারখানার গ্যাসের লোড বৃদ্ধি ও ৬৪ কারখানা নতুন সংযোগের জন্য আবেদন করেও তা পাচ্ছে না—এমন তথ্য দিয়ে বলেন, আমরা জানি, গ্যাসের স্বল্পতা আছে। সরকার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি ও সরবরাহের কথা ভাবছে। তবে বিষয়গুলো শিগগিরই পরিষ্কার হওয়া উচিত, যাতে উদ্যোক্তারা বিদ্যুৎ নাকি গ্যাসভিত্তিক কারখানা গড়ে তুলবেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এ জন্য জ্বালানি নীতি প্রয়োজন।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কারখানায় প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। ডিজেলচালিত জেনারেটর দিয়ে আমাদের সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের পাশাপাশি ব্যাংকঋণের সুদের হারও বেশি থাকায় শিল্পে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ আসছে না। ফলে অর্থনীতিতে যথেষ্ট কর্মসংস্থান হচ্ছে না। কর্মসংস্থানের জন্য হলেও পোশাকশিল্প খাতে গ্যাস-বিদ্যুৎ দেওয়া প্রয়োজন।