গ্যাসের দাম বাড়লো ৩২.৮ শতাংশ
সাবাড়িসহ সব শ্রেণির গ্রাহকের জন্য গ্যাসের দাম ফের বাড়ানো হয়েছে, যা সোমবার (১ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে।
রবিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন।
গ্যাসের নতুন মূল্যবৃদ্ধির ফলে আবাসিক গ্রাহকদের রান্নাঘরে যাদের এক চুলা আছে তাদের ৭৫০ টাকার পরিবর্তে প্রতি মাসে দিতে হবে ৯২৫ টাকা। আর দুই চুলার গ্রাহকদের প্রতি মাসে ৮০০ টাকার পরিবর্তে দিতে হবে ৯৭৫ টাকা।
গৃহস্থালিতে যাদের গ্যাসের মিটারে রয়েছে তাদের প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহারের জন্য ৯ টাকা ১০ পয়সার পরিবর্তে ১২ টাকা ৬০ পয়সা করে দিতে হবে। মিটারে ৩৮.৪৬ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিইআরসি প্রধান বলেন, গড়ে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি ঘন মিটার গ্যাসের দাম ৭.৩৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯.৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গ্যাসের বর্ধিত মূল্য অনুযায়ী, যানবাহনে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের (সিএনজি) দাম সোমবার থেকে প্রতি ঘনমিটারে ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৩ টাকা হবে।
সিএনজি স্টেশনগুলো গ্যাসের জন্য সরকারকে প্রতি ঘনমিটারে ৩২ টাকার পরিবর্তে ৩৫ টাকা করে দেবে।
বাণিজ্যিক ভোক্তারা যেমন রেস্টুরেন্ট, হাসপাতাল, শিক্ষার্থী হোস্টেল, হোস্টেলগুলোকে প্রতি ঘনমিটারের জন্য ১৭.০৪ টাকার পরিবর্তে ২৩ টাকা দিতে হবে।
শিল্প কারখানাগুলোতে গ্যাসের মূল্য ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মালিকদের প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের মূল্য ৭.৭৬ টাকার পরিবর্তে ১০.৭০ টাকা দিতে হবে। চা বাগানের ক্ষেত্রেও একই মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে গ্যাসের মূল্য বাড়েনি।
সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য গ্যাসের মূল্য ৪৩.৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের মূল্য হবে ৩.১৬ টাকার পরিবর্তে ৪.৪৫ টাকা। সার কারখানাগুলোতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের মূল্য হবে ৪.৪৫ টাকা। যা আগে ছিল ২.৭১ টাকা।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিদ্যুৎ খাতে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির কারণে দ্রুতই বিদ্যুতের দামও বাড়বে।
বিইআরসি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, আমদানি করা তরলীকৃত প্রকৃতিক গ্যাস বা এলএনজির কারণে যে লোকসান হচ্ছে তা পুষিয়ে নেয়ার জন্য গ্যাসের মূল্য ৭৫ শতাংশ বাড়ানো প্রয়োজন।
‘এলএনজি আমদানির কারণে যে লোকসান তা পূরণে অতিরিক্ত ১৮ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা প্রয়োজন।’
তবে তিনি এখন বলছেন, ৩৩ শতাংশ অর্থাৎ ৮ হাজার ৬২০ কোটি টাকা ভোক্তাদের থেকে সংগ্রহ করা হবে এবং ২৯ শতাংশ অর্থাৎ ৭ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা সরকারের থেকে ভর্তুকি দেয়া হবে, বাকি ২ হাজার ৪২০ কোটি টাকা ভোক্তাদের টাকায় গঠিত গ্যাস উন্নয়ন ফান্ড থেকে দেয়া হবে।
বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রতিদিন ৮৫০ মিলিয়ন কিউবিক ফিট (এমএমসিএফডি) এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে ধরে নিয়ে এই হারে মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হয়েছিল।