গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণে প্রক্রিয়া শুরু

এবার গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু হল। আগামী ২ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি বিতরণ ও সঞ্চালন কোম্পানিগুলোর দেয়া দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের উপর শুনানী হবে। শুনানী শেষে নতুন দাম ঠিক করবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সকল গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লাভ করলেও নতুন করে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। আবাসিক খাতে গ্যাসের দাম সর্বোচ্চ ১২২ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
বিতরণ কোম্পানিগুলো আলাদা প্রস্তাব দিয়েছে। আলাদা হলেও সকল কোম্পানি একই হারে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। আবাসিক খাতে দুই চুলা প্রতিমাসে ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার টাকা এবং এক চুলা ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৫০ টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
আবাসিক গ্রাহকদের মধ্যে যারা মিটার ব্যবহার করেন, তাদের প্রতি ইউনিট (এক হাজার ঘনফুট) গ্যাসের দাম ১৪৬ টাকা ২৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৩৫ টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ক্যাপটিভ বিদ্যুতে প্রতি ইউনিট ১১৮ টাকা ২৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৪০ টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের এবং পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস  কোম্পানি লিমিটেডের শুনানি ৩রা ফেব্রুয়ারি।  ৪ ফেব্রুয়ারি শুনানি হবে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির। জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম ও সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির শুনানি হবে ৫ ফেব্রুয়ারি। গণশুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য আগ্রহী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার প্রতিনিধিদের ২১শে জানুয়ারির মধ্যে আবেদন করতে হবে।
গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) সঞ্চালনে পর পর তিন বছর পর্যায়ক্রমে দাম বাড়ানের প্রস্তাব দিয়েছে। ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ চার্জ প্রতি ঘনমিটারে যথাক্রমে ৪৭ পয়সা, ৭৩ পয়সা ও ৭৫ পয়সা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রতিঘনমিটার ৩২ পয়সা নেয়া হয়। ২রা ফেব্রুয়ারি জিটিসিএল এর শুনানী হবে।
বর্তমানে বিদ্যৎকেন্দ্রের জন্য প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ৭৯ টাকা ৮২ পয়সা। নতুন প্রস্তাবনায় পাঁচ দশমিক ২৪ শতাংশ বাড়িয়ে ৮৪ টাকা নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া সার কারখানায় নয় দশমিক ৭১ শতাংশ বাড়িয়ে ৮০ টাকা, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ১০২ দশমিক ৯৪ শতাংশ বাড়িয়ে ২৪০ টাকা ও শিল্পে ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়িয়ে ২২০ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। সিএনজি স্টেশনে গ্যাসের দাম ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এতে গ্রাহক পর্যায়ে ৩০ টাকার পরিবর্তে প্রতি ঘনমিটারের দাম পড়বে ৪০ টাকা।
বিইআরসি সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, কমিশনের নির্দেশনা মেনে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো আলাদা আলাদা প্রস্তাব  দিয়েছে। গণশুনানির মাধ্যমে যৌক্তিকতা যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপরই নতুন দাম নির্ধারণ করা হবে।
২০০৯ সালের আগস্টে বিইআরসি সব ধরনের গ্যাসের দাম ১১ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়ায়। এছাড়া ২০১১ সালে দুই দফা সিএনজির দাম বাড়িয়ে প্রতি ঘনমিটার ৩০ টাকা করা হয়। এর পর ২০১২ সালের মে মাসে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় কমিশন।
প্রস্তাব অনুযায়ী গ্যাসের দাম বাড়ানো হলেও আন্তর্জাতিক দরের চেয়ে অনেক কম থাকবে। তাছাড়া আগামীতে প্রতি ইউনিট গ্যাস ১৬ ডলারে আমদানি করা হবে। ধীরে ধীরে গ্যাসের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।