জামালগঞ্জ কয়লাক্ষেত্রে গ্যাস অনুসন্ধান করা হচ্ছে
জামালগঞ্জ কয়লা ক্ষেত্রে গ্যাস অনুসন্ধান করা হচ্ছে। কয়লার স্তরে স্তরে যে গ্যাস আছে তা তুলে বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করা হবে। এজন্য মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে কূপ খনন। আপাতত তিনটি কূপ খনন করা হবে।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, ভারতের মাইনিং অ্যাসোসিয়েটস প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিকে কূপ খনন করার কাজ দেয়া হয়েছে। এই কোম্পানি কয়লার নমুনা সংগ্রহ, কয়লা স্তরে গ্যাসের উপস্থিতি এবং গ্যাসের পরিমান নির্ধারনের সমীক্ষা করবে। মাটির নিচে প্রায় তিন হাজার ৩০০ ফুট পর্যন্ত প্রতিটি কূপ খনন করা হবে। আগামী জুন মাসের মধ্যে একাজ শেষ হবে।
নমুনা ভারতে পরীক্ষা করা হবে। তবে সকল তথ্য পেট্রোবাংলাকে পরে দিয়ে দেয়া হবে।
জ্বালানি বিভাগের একজন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, জামালগঞ্জ কয়লা ক্ষেত্রে যে গ্যাস আছে তা যদি বাণিজ্যিকভাবে তোলা যায় তবে সে গ্যাস শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্পখাতে দেয়া হবে। আবাসিক ব্যবহারে জন্য এগ্যাস দেয়া হবে না।
পেট্রোবাংলার নিজস্ব অর্থে এই কূপ খনন করা হচ্ছে। এতে ২৩ কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়েছে। কূপ খনন করতে ১৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা এবং বাকি টাকা জমি ইজারা, ইজারা নেয়া জমির ফসলের ক্ষতিপূরণসহ অন্য কাজে লাগানো হবে।
জামালগঞ্জের কয়লা মাটির অনেক গভীরে। এজন্য তা উন্মুক্ত বা সুড়ঙ্গ পদ্ধতি কোনটাতেই উপযুক্ত নয়। আর তাই সেখানে খনি উন্নয়ন করা হয়নি। জামালগঞ্জের কয়লা নিয়ে হাইড্রোকার্বন ইউনিট ভারতীয় পরামর্শক সংস্থা মেসার্স প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপার্স প্রাইভেট লিমিটেড এর মাধ্যমে জরিপ করে। জরিপ শেষে তারা জানায়, জামালগঞ্জ কয়লা খনিতে কোল বেড মিথেন (সিবিএম) অথবা আণ্ডারগ্রাউন্ড কোল গ্যাসিফিকেশন (ইউসিজি) পদ্ধতিতে যেতে হবে। সিবিএম মানে কয়লার স্তরে স্তরে জমে থাকা গ্যাস তোলা। আর ইউসিজি হচ্ছে কয়লাকে পুড়িয়ে গ্যাস বানিয়ে তোলা। ইউসিজি পৃথিবীর কোথাও এখনও যথাযথ প্রমানিত না। এজন্য এ পদ্ধতি দেখা যায় না। সেই সুপারিশের আলোকে সিবিএম পদ্ধতিতে গ্যাস তোলার সমীক্ষা শুরু হচ্ছে।
জয়পুরহাটের বড়মাঝিপাড়ায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ মঙ্গলবার কূপ খনন কাজ উদ্বোধন করবেন।
জয়পুরহাটের জামালগঞ্জে ১৯৬২ থেকে ১৯৬৫ সালের এক জরিপে কয়লার সন্ধান পাওয়া যায়। প্রায় ১১৫ কোটি মেট্রিকটন কয়লা এখানে মজুদ আছে। ১৬ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এখনির অবস্থান। এতে এক হাজার ৯২০ ফুট থেকে তিন হাজার ৪৭৪ ফুট গভীর পর্যন্ত কয়লা মজুদ আছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে বড়পুকুরিয়া থেকে শুধু কয়লা তোলা হয়। অন্য চারটির মধ্যে জামালগঞ্জে অনেক নিচে কয়লা বলে তা তোলার কথা ভাবাই হয়নি এতদিন।