খনিজ নিয়ে চীন-ভেনিজুয়েলা চুক্তি
তেল ও খনিজ সম্পদ বিষয়ে চীন ও ভেনিজুয়েলার মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে। সফররত চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের উপস্থিতিতে গত সোমবার দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়। খবর এএফপির।
শি জিন পিং চলতি সফরে চারটি দেশে যাবেন, যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পেছনের আঙিনা হিসেবে ধরা হয়। এরই মধ্যে তিনি আর্জেন্টিনা সফর শেষে প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ ভেনিজুয়েলা পৌঁছেছেন।
ভেনিজুয়েলা সফরকালে শি জিন পিং দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট উগো চাভেজের সমাধি পরিদর্শন করেন। এ সফরে তিনি চাভেজের উত্তরসূরি নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে ৩৮টি চুক্তি সই করেন। চুক্তিগুলোর মধ্যে তেল থেকে শুরু করে অবকাঠামো খাতসহ ৪০০ কোটি ডলারের যৌথ উন্নয়ন তহবিল, ৬৯ কোটি ১০ লাখ ডলারের স্বর্ণ ও তামা মজুদ প্রকল্প রয়েছে। এছাড়া স্যাটেলাইট উন্নয়নের বিষয়েও দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছে।
দেশটির রাজধানী কারাকাসে শি জিন পিং বলেন, ‘চীনা বিনিয়োগের অন্যতম শীর্ষ স্থানে পরিণত হয়েছে ভেনিজুয়েলা। এটি আমাদের সপ্তম বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী দেশ এবং লাতিন আমেরিকায় চতুর্থ ব্যবসায়ী অংশীদার।’
এর আগে আর্জেন্টিনা সফর করেন শি জিন পিং। তখন বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ নিয়ে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা কির্চনারের সঙ্গে চুক্তি হয়।
গত সপ্তাহে লাতিন আমেরিকার জন্য নতুন করে ২ হাজার কোটি ডলারের অবকাঠামো তহবিলের প্রস্তাব দিয়ে গত সপ্তাহে সফর শুরু করেন চীনের প্রেসিডেন্ট। বিশ্লেষকরা এ পদক্ষেপকে ওই অঞ্চলে চীনের স্বার্থ রক্ষার উদ্যোগ হিসেবে বিবেচনা করছেন। তিনি ব্রাজিলে উদীয়মান শক্তিগুলোর সংগঠন ব্রিকসের সম্মিলনে ৫ হাজার কোটি ডলার তহবিলের উন্নয়ন ব্যাংকের উদ্বোধন করেন। এটিকে পশ্চিমা বিশ্ব নিয়ন্ত্রিত বিশ্বব্যাংকের বিকল্প শক্তি হিসেবে ধরা হচ্ছে। কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রোর সঙ্গে সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে শি জিন পিংয়ের এ সফর শেষ হবে।
শি জিন পিং চলতি সফরে মূলত বামপন্থী নেতাদের সঙ্গেই সাক্ষাত্ করেছেন। যদিও ভেনিজুয়েলার রাজনৈতিক বিশ্লেষক কার্লোস মনে করেন, এ সফরে মতাদর্শের চেয়ে ব্যবসায়িক দিকই প্রাধান্য পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘চীনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ বাস্তব সম্মত। এটি ভাবাদর্শ বা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক নয়। চীনের বর্তমান নীতি হচ্ছে— বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ মেয়াদে প্রাকৃতিক সম্পদের অনুসন্ধান করা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় লাতিন আমেরিকায় চীনের বাণিজ্য দ্রুত বাড়ছে। ২০১৩ সালে এর পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৬১৬ কোটি ডলার।