দিনে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে খাগড়াছড়িবাসী!

বিদ্যুতের লাইন মেরামতের জন্য সপ্তাহে দুইদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। বাকি ৫ দিন ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে গ্রাহকরা। আর এই সময়টাতেও বিদ্যুৎ থাকে লো-ভোল্টেজে। এতে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে খাগড়াছড়িবাসী। অবশ্য বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘সহসাই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’

দেশের দীর্ঘতম বিদ্যুৎ লাইনের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০৫ কিলোমিটার। আশির দশকে অনেকটা দায়সারাভাবে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে টানানো লাইন দিয়েই চলছে খাগড়াছড়ির ৯ উপজেলা ছাড়াও পাশের জেলা রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর, বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলা।

পিডিবি সূত্র জানিয়েছে, এই জেলায় বিদ্যুৎ চাহিদা ১৭/১৮ মেগাওয়াট হলেও ক্রটিপূর্ণ লাইনের কারণে একসঙ্গে পুরো জেলায় সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খাগড়াছড়ির বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ১০৫ কিলোমিটার দূরবর্তী হাটহাজারী রিয়েল উপকেন্দ্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ১০৫ কিলোমিটার দূরবর্তী রিয়েল উপকেন্দ্রে কোনো যান্ত্রিক ও প্রাকৃতিক গোলযোগ দেখা দিলে ১২টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়।

বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের কয়েকজন কর্মচারী বলেন, ‘কোনো কারণে যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, তখন আমাদের মন খারাপ হয়ে যায়। কারণ বিদ্যুতের খুঁটিগুলো সবই জঙ্গল পরিবেষ্টিত আর পাহাড়ে। ক্রটি খোঁজার জন্য দীর্ঘ লাইনের প্রত্যেকটি খুঁটি যাচাই বাছাই করতে গিয়ে আমাদের করুণ অবস্থা হয়।’

খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু জাফর  বলেন, একদিকে হাটহাজারী থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত যে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন রয়েছে। পুরাতন, ক্রটিপূর্ণ এই লাইন দিয়ে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির বেশ কয়েকটি উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া চ্যালেঞ্জ ছাড়া আর কিছু না। বৈরী আবহাওয়ায় কোনোভাবে লাইনে সরবরাহ টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, জেলাজুড়ে হাজার হাজার অবৈধ ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চলাচল করছে। এই ইজিবাইকগুলো প্রচুর বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। হাজার হাজার ব্যটারি চার্জ দিতে গিয়ে অল্প দিনের ব্যবধানে ৪টি ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে গেছে। বিদ্যুতের জন্য ইজিবাইক এখন বিষফোঁড়া হয়ে গেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। চলমান লাইন মেরামত হয়ে গেলে বিদ্যুৎ সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যাবে।

নির্মাণাধীন গ্রিড সাব স্টেশন চালু না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যুতের সমস্যা নিরসন হবে না দাবি করে তিনি বলেন, ৩৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ঠাকুরছড়া এলাকায় গ্রিড সাব স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে। আগামী ২০১৭ সালের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সাব স্টেশন তৈরি না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যুতের স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।