দুর্নীতির কারনে বিদ্যুতে গতি শ্লথ
বিদ্যুৎখাতে দুর্নীতি আছে। গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে বেশি দুর্নীতি হয়। তবে এ দুর্নীতি আর থাকবে না। একবারে দুর্নীতি মুক্ত করাও সম্ভব নয়। দুর্নীতির কারণে বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে কিছুটা শ্লথ গতি। এই গতি বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। আসছে ২০১৬ সাল হবে বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতকে দুর্নীতি মুক্ত করার বছর।
শনিবার সেমস গ্লোবাল এবং এনার্জি বাংলা আয়োজিত ‘প্রাথমিক জ্বালানি ও বিদ্যুৎ: দিক নিদের্শনা চায় উদ্যোক্তা‘ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ একথা বলেন। আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরাতে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন। সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ম. তামিম, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সদস্য সেলিম মাহমুদ, বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউ কে ভট্টাচার্য, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, ক্যাব এর উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মকবুল ই এলাহী। এতে বক্তব্য দেন সেমস গ্লোবালের প্রেসিডেন্ট মেহেরুন এন ইসলাম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রফিকুল বাসার।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি খাতে যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে জ্বালানি ঘাটতি থাকবে না। কাজ শুরু হয়েছে। ফল পেতে কয়েক বছর লাগবে। তিনি বলেন, আবাসিক গ্যাস ব্যবহারকারিদের ৭০ ভাগ এলপিজি দিয়ে চাহিদা মেটানো হবে। সে জন্য কাজ চলছে। এতে আমদানি করা গ্যাসের ব্যবহার বাড়বে। নতুন করে তিনটি এলএনজি টার্মিনাল করা হচ্ছে। আমদানি করা এলএনজি দিয়ে শিল্প কারখানা চালানো হবে। জলবিদ্যুতে আরও এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হচ্ছে। অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারিদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযান শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান।
অধ্যাপক ম তামিম বলেন, রাজনৈতিক সমন্বয়ের অভাবে জ্বালানি খাত পিছিয়ে যাচ্ছে। সমন্বিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে ভবিষ্যতেও পিছিয়ে যেতে হবে। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, জ্বালানি নিশ্চিত করা না গেলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। জ্বালানি চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে ঘাটতি পুরণ করতে হলে আমদানির বিকল্প নেই। বিদ্যুৎ, সার, শিল্পে অদক্ষ যন্ত্রপাতির কারণে জ্বালানির অপচয় হচ্ছে। দক্ষ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে জ্বালানি সাশ্রয় করা জরুরী। ইউকে ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশে সমন্বিত জ্বালানি নীতি দরকার। এখানে প্রাথমিক জ্বালানি যা আছে তা ফুরিয়ে যাচ্ছে। আমদানি করা জ্বালানিই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেতে পারে। আর কয়লায় এক্ষেত্রে কম খরচ ও উপযোগি হবে। রামপালে কয়লা ছাড়া অন্য কোম বিকল্প নেই। এখানে যে কয়লা ব্যবহার হবে তা পরিবান্ধব করেই করা হবে। শামসুল আলম বলেন, এই খাতে দুর্নীতি আগে বন্ধ করতে হবে। কোম্পানিগুলো থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের বাদ দিতে হবে। মকবুল ইলাহী বলেন, জ্বালানি তহবিলে যে অর্থ আছে তা জ্বালানি অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করতে হবে। বেশি বেশি অনুসন্ধান করে জ্বালানি মজুদ নিশ্চিত করতে হবে। তবেই ভবিষ্যৎ জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহজ হবে।