প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিস্তা চুক্তির সম্ভাবনা: পানি সম্পদমন্ত্রী

আঞ্চলিক পানি সমস্যা নিরসনে তিস্তা চুক্তি হবে বলে আবারো আশার কথা শুনিয়েছেন পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তবে কবে, কখন বা প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরের সময় হবে কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। পানি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, আমরাতো এখনই তিস্তার পানি চুক্তি চাই। কারণ চুক্তি হলে আমরা নদীতে পানি পাব। সেচ দিতে পারব। চুক্তি না থাকায় এর আগে তিস্তায় পানি কম পেয়েছিলাম, কিছু করা যায়নি।
বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পানি দিবস ২০১৭ উপলক্ষে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বীর প্রতীক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমম্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) আবুল কালাম আজাদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর কবীর বক্তব্য রাখেন।
আনিসুল ইসলাম বলেন, উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অনেক সমস্যার সমাধান খুবই দ্রুত হয়। আগেই কিছু বলা যায় না। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এ বিষয়ে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছেন। এবারের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে তিস্তা চুক্তি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সেমিনারে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানি দূষণ রোধের তাগিদ দিয়েছে বক্তারা। তারা বলেন, যে নদী রাজধানীর নিরাপদ পানির চাহিদার অন্যতম উৎস হতে পারতো সেই বুড়িগঙ্গায় দূষণে পানির সঙ্গে বাতাসও দূষিত হচ্ছে। নদীকেই ময়লা-আবর্জনা বা শিল্পকারখানার বর্জ্য ফেলার অন্যতম জায়গা ভাবায় দূষিত রাজধানীর পাশের অন্য তিন নদীও। চট্টগ্রামসহ অন্য মহানগর এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়েও নদী দখল আর দূষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।
পানির অপচয়রোধ ও বর্জ্যপানির সঠিক ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে সকালে বিশ্ব পানি দিবসের কর্মসূচি শুরু করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি ‘পশুর নদী ও সুন্দরবনকে কয়লা দূষণ থেকে রক্ষা করুন, রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পটি অবিলম্বে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা  করে। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাব ভিআইপি মিলনায়তনে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহবায়ক এডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অধ্যাপক আব্দুল আজিজ ও অধ্যাপক বদরুল ইমাম।  জাতীয় কমিটির সদস্য শরীফ জামিলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সৈয়দ আবুল মকসুদ, অধ্যাপক এম এম আকাশ, ডা. মো. আব্দুল মতিন ও খুলনার সুন্দরবন রক্ষা আন্দোলন সংগঠক অ্যাড. এস এম শাহনওয়াজ আলী। অধ্যাপক বদরুল ইমাম তার মুল প্রবন্ধে রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প বাতিল করা এবং তার পরিবর্তে সেখানে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করার দাবি করেন। সৈয়দ আবুল মকসুদ, সরকারকে সঠিক গবেষনা ও তথ্য বিবেচনায় নিয়ে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ বিষয়টি পূর্নবিবেচনা করার আহবান জানান। এ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে টিআইবি। এছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা কর্মসুচির মধ্য দিয়ে বিশ্ব পানি দিবস পালন করা হয়েছে।