বিদ্যুতের বিলম্ব মাশুল সুবিধা বাড়ল: সমন্বয়হীন সিদ্ধান্ত
করোনায় বিদ্যুতের বিল দেরিতে দেয়ার সুবিধা দেয়া হয়েছে। দেরিতে বিল শোধ করলেও কোন জরিমানা দেয়া লাগবে না। কিন্তু এই জরিমানা না দিলেও বিদ্যুৎ বিলের যে অসঙ্গতি তাতে ভোগান্তির শেষ নেই। ইচ্ছেমত বিল করাতে এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
নতুন অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে সুবিধা আরও একমাস বাড়ানোতে। বিদ্যুৎ বিল জরিমানা ছাড়া না দেয়ার সুবিধা জুন মাস পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এবার আর একাজে কোন সমন্বয় দেখা যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো তাদের ইচ্ছে মতো এই সুবিধা দিচ্ছে।
প্রথমবার যখন বিলম্ব মাশুল বা জরিমানা মওকুফ করা হয় তখন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন সকল বিতরণ কোম্পানি বা সংস্থার জন্য সম্পূরক আদেশ জারি করেছিল (বিইআরসি স্মারক নং ২৮.০১.০০০০.০১২.০৪.০০৩.২০.১০৭১; তারিখ ২৪শে মার্চ ২০ইং)। সকল বিতরণ সংস্থা যেমন, পিডিবি, আরইবি, ডিপিডিসি, ডেসকো, ওজোপাডিকো ও নেসকো সেই আদেশ মত তা বাস্তবায়ন করে। এতে দেশের সকল গ্রাহক একইভাবে এই সুবিধা ভোগ করার সুযোগ পায়। কিন্তু এবার বিইআরসি আর কোন সম্পূরক আদেশ দেয়নি।
৩১শে মে প্রতিমন্ত্রী ঘোষণা দেন নতুন করে আরও একমাস অর্থাৎ জুন পর্যন্ত জরিমানা মওকুফের সিদ্ধান্তের কথা। তিনি বলেন, ‘কোন রকম বিলম্ব মাশুল বা জরিমানা ছাড়া ৩০শে জুনের মধ্যে বিদ্যুৎ বিল জমা দেয়া যাবে। ৩০শে জুন পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিলের বিলম্ব মাশুল মওকুফের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’ কিন্তু নতুন করে বিইআরসি এখন পর্যন্ত কোন সস্পূরক আদেশ জারী করেনি। এতে বিতরণ কোম্পানি ও সংস্থাগুলো নিজস্বভাবে এই সুবিধা দিচ্ছে। এতে সকল গ্রাহক এই সুবিধা সমানভাবে পাচ্ছেন না।
বিআরইবি তার ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কাছে বিভিন্ন শ্রেণির গ্রাহকের জন্য চিঠি দিয়েছে (সূত্র: ২৭.১২.০০০০.১৭১.০০.০৫০.২০.২২১ তারিখ ০১/০৬/২০২০ খ্রি.)। এতে দেখা যাচ্ছে সকল শ্রেণীর গ্রাহককে সমান সুবিধা দেয়া হচ্ছে না। এই চিঠি পর্যালোচনা করে যে অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছে তা হলো, আবাসিক গ্রাহকের ক্ষেত্রে বিল মাস ফেব্রুয়ারী হতে মে মাস অর্থাৎ ৪(চার) মাস বিলম্ব মাশুল ছাড়া ৩০ শে জুন পর্যন্ত দেয়া যাবে। শিল্প, বাণিজ্যিক, কৃষি, সিআইসহ অন্যান্য গ্রাহক (আবাসিক গ্রাহক ছাড়া) বিল মাস মার্চ থেকে মে মাস অর্থাৎ ৩(তিন) মাস বিলম্ব মাশুল ছাড়া ৩০ শে জুন পর্যন্ত দেয়া যাবে। এক্ষেত্রে অন্যান্য শ্রেণি শিল্প, বাণিজ্যিক, কৃষি, সিআইসহ অন্যান্য গ্রাহক এক মাসের সুবিধা পাবে না।
৩রা জুন বিআরইবি নতুন চিঠি দিয়ে জুন পর্যন্ত বিলম্ব মাশুল মওকুফ করে বিল করতে সকল পবিসকে চিঠি দিয়েছে। অন্য বিতরণ কোম্পানিগুলেও একইভাবে বিল করছে বলে জানা গেছে।
এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন থেকে নির্দেশনা না গেলে গ্রাহকের ভোগান্তি বাড়বে।