বিদ্যুৎ চুরি: ১০০ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ৫টি শিল্প, ৩টি বাণিজ্যিক ও ১টি আবাসিক স্থাপনায় সাত লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা উদঘাটন করা করেছে। এই বিদ্যুতের মূল্য প্রায় সোয়া কোটি টাকা। এছাড়া ১০০ অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) বিশেষ টাস্কফোর্স গত পাঁচ দিন অভিযান চালিয়ে এই চুরি উদঘাটন করে। বিদ্যুৎ আদালতে সংশ্লিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতরা সকলে পলাতক।
অভিযানে একাধিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং বিদ্যুৎ চুরিতে ব্যবহার করা দুটি জেনারেটরসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে বংশালে বিদ্যুৎ চুরির ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার দায়ে অরুণ কান্তি দে নামক ডিপিডিসি’র একজন উপবিভাগীয় প্রকৌশলীকে গতকাল বরখাস্ত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বংশালের মৌলভীবাজার দোকান মালিক সমিতির নামে পরিচালিত একটি কাঁচা বাজারে ২২ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ চুরি ধরা হয়েছে। এ চুরির সাথে জড়িত স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক ইরোজ আহমেদ অভ্রকে দন্ডিত করে সাত লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। আধা একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত এ বাজারে  ৯০টি দোকানে দীর্ঘদিন এ বিদ্যুৎ চুরি চল ছিল।
এদিকে বংশালে স্থানীয় নুরুল আমীনের মালিকাধীন ৩টি স্থাপনায় বাইপাস লাইন দিয়ে এক লাখ ৬৫ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ চুরির আর একটি ঘটনা ধরা পড়ে। এখানে রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ ৪০ লাখ টাকা। এছাড়া একই ভবনে ধরা পড়ে গত কয়েক বছরের অনাদায়ী বকেয়া বিদ্যুৎ বিল, যার পরিমাণ ৭০ লাখ টাকা।

power dpdc 2
অন্যদিকে লালবাগের উর্দু রোডে একটি ভবনের ভিতরে ২টি জেনারেটর বসিয়ে অবৈধ বিদ্যুৎ সরবরাহের ঘটনা ধরা পড়ে। লোডশেডিংয়ের  নামে জেনারেটর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা বলে গ্রাহকদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তিনটি ফিডার থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে এ বিদ্যুৎ সরবারহ করা হতো। অভিযানে এখানে ১০০ অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ১০০ মিটার তার জ¦ন্ধ এবং ভবনটির অংশ ভেঙ্গে জেনারেটর ২টি জ¦ন্ধ করা হয়। এ অবৈধ কাজে জড়িতরা সকলেই পলাতক। এ ঘটনায় ডিপিডিসি’র এক লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ চুরির হিসেবে রাজস্ব ক্ষতির পরিমান প্রায় ১০ লাখ টাকা। এদিকে লালবাগ এলাকায় যুবলীগ নেতা মো. বাদলের কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিশাল বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা ধরা পড়ে। তার কারখানায় বাইপাস লাইনের মাধ্যমে তিন লাখ নয় হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় মো. বাদলকে ২৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বাদল পলাতক, তার কারখানা বল্পব্দ করে দেয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ আদালতে মামলা করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ চুরির জন্য বনশ্রীতে জাহাঙ্গীর আলমকে দুই লাখ ৬৮ হাজার টাকা, লালবাগের প্লাস্টিক  সমিতির নেতা মো. আলী আহমেদকে ১০ লাখ টাকা, এ কে কোলী প্রিন্টিং প্রেস নামক কারখানাকে সাত লাখ টাকা ও হামিদুল্লাহ হামিদের কারখানাকে তিন লাখ ৩৮ হাজার টাকা এবং স্ট^ামীবাগে আল নূর এমব্রয়ডারীকে নয় লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ৫টি স্থাপনায় বিদ্যুৎ চুরির পরিমাণ এক লাখ ৫৭ হাজার ইউনিট।
ডিপিডিসি’র বিশেষ টাস্কফোর্স প্রধান মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত অভিযানে কোম্পানীর প্রকৌশলী ও বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা সহায়তা করেন। এ বিষয়ে টাস্কফোর্স প্রধান সমকালকে বলেন, বিদ্যুৎ চুরির চত্রক্র ভেঙ্গে ফেলার জন্য বিরতিহীন অভিযান চলছে। বিদ্যুৎ চুরির অর্থ শুধু কড়ায় গণ্ডায় আদায় করা হবে না, অপরাধে জড়িতদের জেল জরিমানাও ভোগ করতে হবে।

বাসার
শ্বন্ধ: ৪৫২