নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে বরাদ্দের পার্থক্য আগের মতই আকাশ ছোঁয়া। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট বরাদ্দের প্রায় পুরোটাই বিদ্যুৎখাতে। আর অল্প কিছু জ¦ালানিতে।
মোট বরাদ্দের ৯২ ভাগের বেশি থাকছে বিদ্যুতে। আর জ¦ালানিতে ৮ ভাগেরও কম।
শতভাগ বিদ্যুতায়ন ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে জ্বালানির চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র, তেল মজুদাগার ও এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বরাদ্দ বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১৩ শতাংশ।
বিদ্যুতের বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে সেখানে বরাদ্দ বেশি। তবে জ¦ালানিতেও সমস্যা কম নয়। বড় ধরণের প্রাথমিক জ্বালানি ঘাটতি মোকাবেলা করার দিন আসছে সামনে। কিন্তু সেগুলো সমাধানের জোরালো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
গত কয়েক বছর বাজেটে এর প্রতিফলন দেখা যায়নি। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।
বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ছে। কিন্তু আরও বাড়াতে গেলে প্রাথমিক জ¦ালানির যথাযথ যোগান দিতে হবে। প্রাথমিক জ¦ালানির যোগান না থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদন সমস্যায় পড়বে। সাধারণ এই হিসাব মেটাতে এলএনজির উপর পুরো ভরসা করা হলেও তা এখনও পুরো সক্ষমতায় আসেনি। এলএনজি নির্ভরতা বাড়িয়ে অর্থসংকটে পড়তে হয়েছে। এবং যথেষ্ট পরিমান এলএনজি আমদানি থেকে সরকার বিরত থেকেছে। এতে গ্যাস সংকট ছিল কিছু দিন আগে। এখনও আছে। ফলে এবিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ জরুরি।
২০২১-২২ অর্থবছর ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেটের মধ্যে বিদ্যুৎ জ¦ালানিতে দেয়া হয়েছে ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। যা মোট বরাদ্দের সাড়ে চার ভাগ। বিদ্যুৎখাতে দেয়া হয়েছে ২৫ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা আর জ¦ালানিতে দুই হাজার ৮৬ কোটি টাকা। এটা সামগ্রিক বাজেটের হিসাব।
২০২০-২১ অর্থবছর বিদ্যুৎ জ্বালানিতে ছিল ২৬ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। এবার বরাদ্দের পরিমাণ বেড়েছে ৭২৬ কোটি টাকা।
জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি চাহিদা বৃদ্ধির নিরিখে মানসম্মত জ্বালানি ও বিদ্যুতের সংস্থানের কোনো বিকল্প নেই। এটি সর্বজনবিদিত যে বাংলাদেশের ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি মানসম্মত ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের সংস্থান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারের দূরদর্শী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দেশে গত ১২ বছরে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ২০০৯ সনের তুলনায় বর্তমানে ৫ গুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ) ২৫ হজার ২২৭ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার সমন্বিত উন্নয়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার ঘরে-ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৯৯ ভাগকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
Next Post