বিদ্যুৎ জ্বালানিতে ১৫ হাজার ১৪ কোটি
আসন্ন উন্নয়ন বাজেটের ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। যার মোট পরিমান ১৫ হাজার ১৪ কোটি টাকা। আর মোট বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ১৫ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। উন্নয়ন বাজেটে মোট বরাদ্দের চার নম্বর অবস্থানে আছে এই খাত। পরিবহন, পল্লী উন্নয়ন ও শিক্ষা এই তিনের পরেই আছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি। আগামী ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বাজেটে এই বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। বৃহষ্পতিবার জাতীয় সংসদে তিনি নতুন অর্থ বছরের বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন। এবার বিদ্যুৎ খাতে চলতি অর্থবছর থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা কম প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে জ্বালানি খাতে গত বছর থেকে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে এবার পেনশন ও গ্রাচ্যুইটির জন্য ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যুৎখাতে মোট বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ১৩ হাজার ৬২ কোটি টাকা। এরমধ্যে উন্নয়নে বরাদ্দ ১৩ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছর সংশোধিত বাজেটে ছিল ১৫ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ দুই হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা কম। আর অনুন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ রাখতে বলা হয়েছে ২৩ কোটি টাকা। যা ছিল ১৮ কোটি টাকা। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য মোট বরাদ্দ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে এক হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে উন্নয়নে প্রস্তাব করা হয়েছে এক হাজার ৯১১ কোটি টাকা। চলতি বছর সংশোধিত বাজেটে এই বরাদ্দ ছিল এক হাজার ৬৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৮৪৩ কোটি টাকা এবার বেশি বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। জ্বালানি খাতে অনুন্নয়ন খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৬২ কোটি টাকা। চলতি বছর এই বরাদ্দ আছে ৫২ কোটি টাকা। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী: বাজেট পেশ করে অর্থমন্ত্রী সংসদে বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ আরও ১৬ হাজার ৮৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে আসবে। বর্তমানে সাত হাজার ২৯৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২৯টি কেন্দ্র নির্মানাধিন আছে। ছয় হাজার ৬৮১ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২০টি কেন্দ্রের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন আছে। চার হাজার ৪৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৮টি কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা আছে। ব্যক্তিখাতে মহেশখালিতে আরও বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চিন্তা চলছে। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রর পাশাপাশি কয়লা, ডিজেল, ফার্নেশ তেল, নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর জোর দেয়া হচ্ছে। ইবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ২০২১ সালের মধ্যে তিন হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন, ১০ হাজার কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন, এক লাখ ৫০ হাজার কিলোমিটার বিতরণ লাইন করার পরিকল্পনা আছে। ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিবেশি দেশ থেকে ছয় হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা করা হয়েছে। গ্যাস অনুসন্ধান বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাপেক্স ৫৩টি অনুসন্ধান কূপ, ৩৫টি উন্নয়ন কূপ খনন এবং ২০টি কূপ মেরামত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এসব কূপ থেকে ৯৪ কোটি ৩০ লাখ থেকে ১১০ কোটি ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। এলএনজি আমদানি করা হবে। এজন্য কক্সবাজারের মহেশখালিতে প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার ঘনমিটার ধ্ারণক্ষমতার টার্মিনাল করা হবে। এ ছাড়া, মহেশখালি ও পটুয়াখালীর পায়রায় আরও ২টি এলএনজি টার্মিনাল করার পরিকল্পনা আছে। এই এলএনজি আমদানির উপর ভিত্তি কওে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২০১৮ সালে গ্যাস দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে।