বিদ্যুৎ পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার তাগিদ ১৪ দলের
বিডিনিউজ:
তীব্র গরমে লোডশেডিং ফিরে আসায় মানুষের তীব্র ক্ষোভের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ‘দ্রুত স্বাভাবিক করতে’ উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ এসেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ১৪ দলের তরফে।
বিষয়টি নিয়ে সরকারের ‘সচেতন তাগিদ’ আছে কি না, সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা।
রোববার ইস্কাটনে জোটের বৈঠক শেষে এই তাগিদ দেন জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এতে উঠে আসে বিদ্যুৎ পরিস্থিতিও, যা জ্বালানি সংকটের কারণে বর্তমানে নাজুক অবস্থায় দাঁড়িয়েছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর বিদ্যুৎ খাত নিয়ে নানা পরিকল্পনা হাতে নেয়। এক যুগের বেশি সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়ে চার গুণ হয়েছে, উৎপাদনক্ষমতা বেড়েছে পাঁচ গুণ। দেশের শতভাগ এলাকা বিদ্যুৎসুবিধার আওতায় আসাকে সরকার তাদের বড় সাফল্য হিসেবেও প্রচার করে।
বিদ্যুৎ নিয়ে ফুরফুরে মেজাজে থাকা সরকার ধাক্কা খায় গত বছরের শেষ দিকে। ইউক্রেই যুদ্ধ শুরুর পর জ্বালানির দাম ব্যাপকহারে বেড়ে যাওয়ার কারণে পরিকল্পনা করে উৎপাদন কমানোর ঘোষণা আছে। দুই মাস ভোগান্তির পর শীতকাল ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পরিস্থিতি সরকারের জন্য স্বস্তি নিয়ে আসে।
তবে মজুদ ফুরিয়ে আসার পরও ডলার সংকটে কয়লা আমদানি নিয়ে অনিশ্চয়তা, জ্বালানি তেল ও গ্যাস সরবরাহের অভাবে আবার ফিরে এসেছে দেড় দশক আগের লোডশেডিংয়ের স্মৃতি। সরকারের হিসাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ঘাটতি আড়াই হাজার মেগাওয়াট। তবে রাজধানী ঢাকাতেই দিনে রাতে বিদ্যুৎ যাচ্ছে বারবার। মফস্বল ও গ্রামের পরিস্থিতি আরও খারাপ।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন ‘অসহনীয়’ লোডশেডিং থেকে মুক্ত হতে হতে আরও দুই সপ্তাহ লেগে যাবে।
আমির হোসেন আমু বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সব রকম চেষ্টা করছেন। আমাদের দেখতে হবে সরকার সচেতন কি না, প্রচেষ্টা আছে কি না। কিন্তু পরিস্থিতি হাতের বাইরে থাকলে কাউকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।
“বিএনপির সময় দেশে ১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকত না। আমরা বিদ্যুৎ সমস্যা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে আনার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।”
নিত্যপণ্যের দাম নিয়েও উদ্বেগ
নিত্যপণ্যের দরের ঊর্ধ্বগতি নিয়েও ১৪ দলের বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বাজার পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করতে জোটের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে বলেও জানান আমু।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে কাগজ ও কলমের ওপর কর বাড়ানোর যে প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটিও পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছে ক্ষমতাসীন জোট।
আমু বলেন, “আমরা পড়াশোনায় গুরুত্ব দিচ্ছি, প্রধানমন্ত্রী নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা পয়সায় বই বিতরণ করছেন। সবকিছু ঠিক আছে। সেইক্ষেত্রে কলম ও কাগজের দাম বৃদ্ধি পড়াশোনার ক্ষেত্রে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। সংবাদপত্রের উপর ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। তাই আমরা মনে করি কাগজ-কলমের দাম কমানো উচিত। আরোপিত কর প্রত্যাহার করা উচিত।”