বিশ্বকাপ শুরু লোডশেডিংও শুরু

বিশ্বকাপ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের লোডশেডিংও শুরু হয়েছে। কিছুদিন আগেও যেখানে দিনে দুই থেকে তিনবার লোডশেডিং করা হতো। বিশ্বকাপ শুরুর পর থেকে তা বেড়ে সারাদিনে সর্বোচ্চ ৫বারও লোডশেডিং হচ্ছে।
চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ার কারণেই লোডশেডিং করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিতরণ সংস্থাগুলো। জ্বালানি ঘাটতি ও মেরামতের কারণে প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ কম উত্পাদন হচ্ছে। এ অবস্থায় আসন্ন রমজানে এই লোডশেডিং আরো বাড়বে বলে আশংকা সংশ্লিষ্টদের।
রাজধানীর বহু এলাকার গ্রাহক লোডশেডিং এর কারণে বিশ্বকাপের উদ্বোধন, উদ্বোধনী খেলা দেখতে পারেননি। প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকার গ্রাহক লোডশেডিং এর কারণে খেলা দেখতে না পারার অভিযোগ করেছেন।
মধুবাগের বাসিন্দা রাজন জানান, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্যুত্ চলে যায়। এর আধ ঘণ্টা পর আবার বিদ্যুত্ সরবরাহ শুরু হলেও রাত একটায় উদ্বোধনী খেলা শুরু হওয়ার পর পর আবারো লোডশেডিং হয়। প্রায় প্রতিদিনই বিশ্বকাপের কোনো না কোনো খেলা লোডশেডিং এর কারণে দেখতে পারছি না। একই অভিযোগ শান্তিনগরের বাসিন্দা রাসেলের। তিনি বলেন, গত সোমবার জার্মানির প্রথমার্ধের খেলার পর লোডশেডিং শুরু। রাত ১১টায় আগে কখনো লোডশেডিং হয়নি। নতুন করে রাতে, মধ্য রাতের খেলার সময় লোডশেডিং শুরু হয়েছে।
ঢাকায় বিদ্যুত্ সরবরাহকারী তিনটি প্রতিষ্ঠানে মোট ১ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুতের চাহিদা ঢাকা বিদ্যুত্ বিতরণ কোম্পানির (ডিপিডিসি) গ্রাহকদের। ডিপিডিসির মোট ১ হাাজর ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে গতকাল মঙ্গলবার সাড়ে ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিপিডিসির একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই চাহিদার তুলনায় আমরা বিদ্যুত্ কম পাচ্ছি। ফলে লোডশেডিং করে লোড ম্যানেজ করতে হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় তিন থেকে পাঁচবার লোডশেডিং হচ্ছে। রাজধানীতে বিদ্যুত্ সরবরাহকারী আরেকটি প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিদ্যুত্ বিতরণ কর্তৃপক্ষ (ডেসকো) জানায়, তাদের প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে সর্বোচ্চ ৭শ মেগাওয়াট বিদ্যুত্। ফলে লোডশেডিং হচ্ছে। আরেকটি বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান আরইবি ঢাকার আশেপাশের কিছু এলাকায় বিদ্যুত্ সরবরাহ করে থাকে। সেখানেও একই অবস্থা বলে জানিয়েছে আরইবি।
পিডিবি জানায়, গতকাল সারাদেশে সাত হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুত্ সরবরাহ করা হয়েছে ছয় হাজার ১০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুত্। প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ ঘাটতির কারণে সারাদেশেই লোডশেডিং বেড়েছে।
এদিকে জ্বালানি ঘাটতি ও যন্ত্রপাতি মেরামতের কারণে প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ কম উত্পাদন হচ্ছে। এরমধ্যে গ্যাস ঘাটতির কারণে ৪৪৩ মেগাওয়াট এবং মেরামতের কারণে ২ হাজার ৩০৯ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ কম উত্পাদন হচ্ছে। বিদ্যুত্ উত্পাদনে প্রায় এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হলেও গতকাল ৮শ ৮৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে।
গতকাল ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে ৩৫ মেগাওয়াট, খুলনায় ৩৯ মেগাওয়াট, রাজশাহীতে ৩৭ মেগাওয়াট, কুমিল্লায় ২৬ মেগাওয়াট, ময়মনসিংহে ২১, বরিশালে ৭ এবং রংপুরে ২২ মেগাওয়াট করে লোডশেডিং হয়েছে বলে পিডিবি জানায়।